তথা হইতে অনতিদূরে, এক Open-air Museumএ গেলাম এবং ফিরিবার মুখে এক বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যে একটি নূতন ধরণের Mill দেখিলাম। ইহা বায়ুর সাহায্যে পরিচালিত হইয়া, দ্রব্যসামগ্রী পিশিয়া গুঁড়া করে। যাইতে যাইতে অসংখ্য পাহাড়পর্বতের দেখা পাইলাম, কিন্তু এদের কাহারই যেন সে প্রাণ নাই, নেহাৎ থাকিতে হইবে বলিয়াই যেন আছে, স্থানান্তরে যাইতে পারিলেই যেন বাঁচে! তখন করুণার্দ্রচিত্তে কামনা করিয়াছিলাম, সমতুল সোণার বাঙ্গালায় ইহাদের কতকগুলির আমদানী করাই। কিন্তু সে সব “সুরসদ্মবাহা বৃহন্তো হংসাঃ” ত আর এখন নাই! তা ছাড়া বিদেশী জিনিষপত্রে, একেই তো বঙ্গমাতার ক্রোড় বোঝাই, ইহাদের রাখিবার স্থানই বা কোথায়? ইত্যাদি চিন্তায় এই আজ্গবী বাসনাকে আর ঠাঁই দিতে পারিলাম না।
সুইডেনের আরো ছোটোখাটো দুই চারিটি স্থানে গেলাম। কিন্তু, কোথাও কোন পরিবারের সঙ্গে আলাপ না হওয়াতে, এখানকার সামাজিক রীতিনীতি জানিবার সুযোগ ঘটিল না। Swedishরা, Norwegianদের মত তত সুশ্রী না হইলেও, সাধারণতঃ সকলেই বেশ সমদর্শন; এদেশে ধনশালীর সংখ্যা বেশী নয়। শ্রমজীবীরা অনেকেই কৃষিকার্য্য করিয়া জীবনধারণ করে। দীনদরিদ্রের ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বনের উপায় নাই বলিয়া, সকলকেই খাটিয়া খাইতে হয়। ইহারা যেমন পরিশ্রমী, তেমনই সুস্থকায়। তবে আমাদের অসিত-অঙ্গে যে মলিনতাটুকু একেবারে মিশ খাইয়া যায়, ইহাদের শ্বেতচর্মে তাহা ধরা পড়ে বলিয়া একটু দৃষ্টিকটু হয়। এদেশের ‘সার্ডিন্’ মৎস্যের বিস্তর রপ্তানী হয়। প্রতিদিন ধীবরগণ-কর্ত্তৃক ইহারা লাখে লাখে ধৃত হইয়া, সুস্নিগ্ধ তৈলনিহিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টিনাগারে রক্ষিত ও বন্ধীকৃত হইয়া দেশ-বিদেশে প্রেরিত হয়। ইহা বড়ই সুস্বাদু বলিয়া স্থানীয় তাজা মাছ ছাড়িয়া অনেকে ইহাই ব্যবহার করিয়া থাকেন। আমরা মৎস্য-প্রধান-দেশবাসী হইয়াও ইহার প্রতি যথেষ্ট পক্ষপাতিত দেখাইয়া থাকি। বিদেশী বস্তুর নেশা এম্নি আমাদিগকে পাইয়া বসিয়াছে!— সুইডেনের দিয়াশলাই ত এখন আমাদের ঘরে ঘরেই দেখা যায়, সুতরাং এ ব্যবসায়ের যে কি পরিমাণ আয়, তা সহজেই অনুমিত হইতে পারে। বিশেষ বৃক্ষের কাষ্ঠে ইহা নির্মিত হয় এবং এ বৃক্ষ এ দেশের যথা তথা জন্মে। এ জন্য বড় বড় কাষ্ঠব্যবসায়ীরা আপন আপন নির্দিষ্ট জমীতে ইহা সংরোপণ করিয়া সযত্নে রক্ষা করে। অনেক স্থানে ইহার প্রমাণ পাইয়াছিলাম। আমরা এই নিত্যনৈমিত্তিক ব্যবহার্য্য বস্তুটির প্রস্তুত প্রণালী দেখিয়া আসিতে পারিলাম না, এই বড় দুঃখ রহিয়া গিয়াছে। এজন্য কুক্