লিখিয়া রাখে। অনেক সময় অকারণে তাহার মনে আঘাত দিয়া সে যেন অমিয়ার উপর তাহার মনের ভাবটুকু বাহির করিয়া লইবারও প্রয়াস পায়।
একদিন কাছে পাইয়া সে রণেন্দ্রকে ধরিয়া বসিল— “ঠাকুরপো, তুমি যে হঠাৎ এমন দুর্ল্লভ হ’য়ে উঠ্লে— ব্যাপারখানা কি বল দেখি?”
অমিয়া আসিয়া পড়ায় রণেন্দ্রেরে মুখ কাণ সমস্তই রাঙ্গা হইয়া উঠিল। মীনার তীক্ষ্ণ দৃষ্টির কাছে সে যে নিজেকে লুকাইতে পারে নাই তাহা বুঝিয়াও কণ্ঠস্বরে বিদ্রূপ ভরিয়া কহিল—“সুলভ ছিলেম তা হলে বলুন। আশ্চর্য্য! আমি কিন্তু চিরদিনই এর উল্টো কথা শুনে আস্চি আপনার মুখে। আপনার উদ্ভাবনী শক্তির চেয়ে বিস্মরণী শক্তিই প্রশংসনীয়—সন্দেহ নেই” বলিয়া পাশ কাটাইয়া চলিয়া যাইবার উদ্যোগ করিতে মীনা কহিল—“সব কথা ঠাট্টা করে উড়িয়ে দিলেই ত আর উড়্বে না! সেদিন তোমার সঙ্গে ঝরণা দেখ্তে যাবার কথা বলায় অমিয়া বল্লে—‘তিনি কি যাবেন? তিনি ত এদিকেই আর ঘেঁসেন না’—জিজ্ঞাসা কর না ঐ ভদ্রলোককে—উনি আর মিথ্যে সাক্ষী দেবেন না?” বলিয়া দ্বার সমীপাগত অমিয়ার পানে চাহিয়া সে মৃদু মৃদু হাসিতে লাগিল।