“এরও কারণ আছে! তাকে না ভালবেসে কি কেউ থাকতে পারে!”
যা। তা ঠিক; তুমি ভেবো না যে তাকে আমি ভালবাসি নে কিন্তু আমি তার অযোগ্য; আমি তাকে বিবাহ করব না।
প্র। তুমি নীরজার অযোগ্য! কি বল তুমি যামিনী! তাহলে তার যোগ্য যে কে তা তো জানি নে।
যা। তুমি যাই বল ভাই, আমি বাস্তবিকই তার অযোগ্য, নীরজা আমাকে ভালবাসে না।
এই কথায় প্রমোদ তাহার বিবাহের অনিচ্ছার কারণ বুঝিলেন, তাহার সেই বিষাদার্দ্র স্বরে তাহার হৃদয়ের গভীর যাতনাও অনুভব করিতে পারিলেন। বুঝিয়া মর্ম্মপীড়িত হইয়া তিনি নিরুত্তর হইয়া রহিলেন। যামিনী কিছু পরে আবার বলিলেন, “প্রমোদ, তোমাকে বলব? নীরজা কার প্রতি অনুরক্ত শুনবে? নীরজা তোমাকেই ভালবাসে।”
বলিতে লজ্জা করে, কিন্তু এই কথা শুনিয়া বন্ধুর গভীর দুঃখের মধ্যেও প্রমোদের হৃদয় সহসা যেন আহ্লাদে কম্পিত হইয়া উঠিল। কিন্তু আপনাকেই যামিনীর কষ্টের কারণ ভাবিয়া তখনি আবার সে আহ্লাদ থামিয়া আসিল। যামিনী বলিলেন—
“আমি কি কিছু বুঝি না, ভাই? তুমিও যে মনে মনে নীরজাকে ভালবাস তা আমি বুঝেছি। এখানে এসে সেটা বেশ ভাল ক’রেই বুঝেছি। বুঝে কি প্রতিজ্ঞা করেছি শোন—আমি তোমাদের পথের কণ্টক হব না। আমি নিজে উদ্যোগী হয়ে তোমাদের বিবাহ দিয়ে দেব, এই আমার সংকল্প।
যামিনীর নিঃস্বার্থ ভাবে প্রমোদ স্তম্ভিত হইয়া পড়িলেন। যামিনী দেব কি মানব, তাহা তিনি ঠিক বুঝিয়া উঠিতে পারিলেন না। অবশেষে বলিলেন “যামিনী তুমি মানুষ নও দেবতা; তোমার বন্ধুতা