পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বিতীয়

কৈশোরে

 ক্রমশঃ উৎসবের কোলাহল থামিল। দিন দিন আমিও প্রকৃত অবস্থা উপলব্ধি করিতে লাগিলাম। পিসিমার থাকিবার আর প্রয়োজন রহিল না। নব বধূকে সংসার ধর্ম্ম বুঝাইয়া দিয়া তিনি ছয় সাত মাস পরে চলিয়া গেলেন। আমি তখন হইতে পিসিমার ঘরে একাকিনী শয়ন করিতাম।

 বিমাতা বয়সে আমার অপেক্ষা এক বৎসরের বড় ছিলেন। আমার দেহের গঠন পরিপুষ্ট এবং বলিষ্ঠ হওয়ায় আমাকেই বড় দেখাইত। তিনি সুন্দরী ছিলেন―গৃহকার্য্য ও লেখাপড়া সামান্যরূপ জানিতেন। তাঁহার সহিত আমার বনিবনাও না হইবার কোন কারণ ছিল না, কারণ আমি অধিকাংশ সময় আমার পড়াশুনা লইয়াই ব্যস্ত থাকিতাম।

 বাবা অন্তঃপুরে আসিলে, বিমাতা প্রায়ই কোন কার্য্য ছলে তাঁহার কাছে থাকিতেন। বিশেষ কোন প্রয়োজন ব্যতীত পিতার সহিত এখন আমার সাক্ষাৎ হইত না। পূর্ব্বে তিনি আমাকে স্কুলের পড়ার কথা জিজ্ঞাসা করিতেন―কাছে বসিয়া আমার গান শুনিতেন, এখন আর তাহা নাই। বাবা যেদিন বিমাতাকে লইয়া থিয়েটারে যাইতেন, আমাকে নিতেন না, সে-দিন নন্দদাদার সঙ্গে আমি বায়স্কোপে যাইতাম।