পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেহ বিক্রয়
৮৯

যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়াছে। সেই জন্য কলিকাতা বোম্বাই প্রভৃতি বড় বড় সহরের হাসপাতাল গুলিতে নার্সের কাজ করিবার লোকের অভাব ঘটিয়াছে। আমাদের আশ্রমে সংবাদ পত্র আসিত। আমি বাংলা খবরের কাগজ হইতে পড়িয়া অন্যান্য মেয়েদের শুনাইতাম।

 রাজবালার মাথায় কি এক মতলব আসিল। সে একদিন আমাকে বলিল “আয় ভাই, আমরা নার্সের কাজ শিখি।” আমি বলিলাম “আশ্রমের কর্ত্তৃপক্ষ সে ব্যবস্থা না করিলে ত হয় না।” শ্রীযুত—দাস মহাশয় একদিন আশ্রম পরিদর্শন করিতে আসিলে রাজবালা তাঁহাকে এই সকল বিষয়ে কথা বলিল। তিনি শুনিয়া সন্তুষ্ট হইলেন এবং আমাদিগকে প্রাথমিক কিছু শিক্ষা দিবার নিমিত্ত একজন ডাক্তার নিযুক্ত করিলেন। কালীদাসী লেখাপড়া জানিত না। তাহাকে শিখাইয়া লইবার ভার আমার উপর পড়িল। তিন মাসের মধ্যেই সে খুব উন্নতি দেখাইল। মাঝে মাঝে আমাদিগকে হাসপাতালে লইয়া যাওয়া হইত। সেখানে আমরা ডাক্তারী নানাবিধ যন্ত্র ও ঔষধাদির নাম শিখিতাম।

 গুপ্ত প্রণয়ীরা আমাদিগকে তখনও ছাড়ে নাই। তাহাদের অত্যাচারে একেবারে অতিষ্ঠ হইয়া উঠিলাম। একটা মেয়ের উপর একদিন পাশবিক অত্যাচারের উপক্রম করায় সে নিজেকে বাঁচাইবার জন্য পাশের বাড়ীতে লাফাইয়া পড়ায় তাহার পা ভাঙ্গিয়া যায়,এ জন্য মোকদ্দমাও হইয়াছিল, কিন্তু তাহার ফলাফল শুনি নাই। একদিন সন্ধ্যার পরে আমি, রাজবালা, কালীদাসী ও আর একটী মেয়ে (তাহার নাম এখন আমার মনে নাই— বোধ হয় খেঁদি বা এমন কিছু