সিরাজদ্দৌলা (নাটক)/পঞ্চম অঙ্ক/প্রথম গর্ভাঙ্ক
(পৃ. ১৭৮-১৭৯)
পঞ্চম অঙ্ক
প্রথম গর্ভাঙ্ক
মুর্শিদাবাদ—মীরণের কক্ষ
মীরণ ও মহম্মদী বেগ
মীরণ। মহম্মদীবেগ, তোমায় এ কাজ কর্তেই হবে। সিরাজ কারাগারে আছে, এই চাবি নাও, তারে বধ ক’রে নবাবের খয়ের খাঁ হও। তোমায় হাজির পদ দেবো। তুমি কেমন নেমকহালাল—বুঝ্বো! কি ভাব্ছো?
মহম্মদী। তাইতো—তাইতো, আলিবর্দ্দী বড় যত্ন কর্তো, তার বেগমও যত্ন কর্তো—
মীরণ। তুমিও কি কম করেছ?
মহম্মদী। হুঁ—তা—করেছি;—আমি হাজির চাই নি,—আমায় কি দেবেন—দেন। দেখুন, কেউ এ কাজ কর্তে চাচ্ছে না, কেউ এ কাজ কর্বেও না!
মীরণ। তুমি যা চাও, দেবো।
মহম্মদী। না—আগে দিন,—
মীরণ। আচ্ছা, তুমি এসো। আমি লুৎফউন্নিসার কারাগারে যাচ্ছি, লুৎফউন্নিসার যত জহরৎ লুট হয়েছে, সব তোমায় দেবো।
মহম্মদী। হ্যাঁ—হ্যাঁ—বান্দা তাঁবেদার—বান্দা—তাঁবেদার!
মীরণ। তবে প্রস্তুত হ’য়ে এসো।
মহম্মদী। যে আজ্ঞে—যে আজ্ঞে—আমি হুকুমবরদার, নিমকহারাম নই।
মীরণের প্রস্থান
কেন—আমার গুণা কি? যে নবাব,—তার হুকুম রাখ্বো। আলিবর্দ্দীতো সরফরাজখাঁর রাজ্য কেড়ে নিয়ে নবাব হয়েছিল; তখন তার হুকুম মেনেছি। সিরাজ নবাব হয়েছিল, তখন তার হুকুম মেনেছি। তার হ’য়ে কি না করেছি? মেয়ে মানুষ যুটিয়েছি;—এখন মীরজাফর খাঁ নবাব, তার হুকুম রাখ্বো না? খাইয়ে পরিয়ে মানুষ করেছে!—রেখে দাও—খাইয়ে-পরিয়ে মানুষ। বাদসার বেটা বাদসাকে খুন ক’রে তক্ত নিয়েছে। প্রতিপালক নবাবকে বধ ক’রে কত লোক নবাবী নিয়েছে;—কেন, এই আলিবর্দ্দী ত নিয়েছে, তাতে নিমকহারামী হয় নাই? ভাইকে খুন করে চাচাকে খুন করে, আমার খুন কর্তেই দোষ! পরকাল!—সে তখন দেখা যাবে,—শেষ মক্কায় যাবো—আর কি। ঢের জহরৎ—আমীর হ’য়ে যাবো!প্রস্থান