বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গঠনমূলক স্বদেশ সেবা
৯৫

কাছে সবচেয়ে বড় সমস্যা বলে মনে হয়। তোমাদের হাতে শক্তিশালী অস্ত্র সংবাদপত্র আছে, তোমরা সেই অস্ত্র এদের জন্য প্রয়োগ কর। দেশের লোককে জানাও এদের দুঃখ দুর্দশা কিরূপ অপরিমেয়, কি ভাবে সেই দুঃখ মোচন করতে হবে তার পথ দেখিয়ে দাও। তবেই তোমাদের সংবাদপত্রসেবা সার্থক হবে।”

 শেষ জীবনে তাঁহার মনে এই ধারণা হইয়াছিল যে তিনি শান্তিনিকেতনের ও শ্রীনিকেতনের মধ্য দিয়া যে গঠনমূলক কাজ করিতেছেন, তাহার সম্যক পরিচয় দেশের লোক পায় নাই। উহা যাহাতে লোকে ভাল করিয়া জানিতে পারে, সেজন্য তাঁহার বিশেষ আগ্রহ হইয়াছিল। তিনি নিজে কালীমোহনবাবুকে বলিয়া বিশেষ ব্যবস্থা করিয়া শ্রীনিকেতনের কাজ আমাদিগকে দেখাইয়াছিলেন। আর একবার ‘রবিবাসর’-এর সাহিত্যিকমণ্ডলীর সদস্যদিগকে তিনি শান্তিনিকেতনে নিমন্ত্রণ করেন। সদস্য হিসাবে আমিও তাঁহাদের মধ্যে ছিলাম। রবীন্দ্রনাথ আমাদের ন্যায় দরিদ্র সাহিত্যিকদিগকে যেরূপ রাজোচিত অভ্যর্থনা করেন, তাহা জীবনে ভুলিব না। যে দিন ‘উত্তরায়ণে’ আমাদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া খাওয়ান, সেদিনের দৃশ্য এখনও চোখের সম্মুখে ভাসিয়া উঠিতেছে। বৃহৎ হলে আমরা সকলে খাইতে বসিয়াছি। মধ্যস্থলে রবীন্দ্রনাথ আতিথেয়তার প্রতিমূর্তি স্বরূপ বসিয়াছেন। পরিবেশন করিতেছেন কবির পুত্রবধূ, দৌহিত্রী ও পালিতা পৌত্রী।