১৯১
কাছে যবে ছিল পাশে হল না যাওয়া,
চলে যবে গেল তারি লাগিল হাওয়া।
যবে ঘাটে ছিল নেয়ে তারে দেখি নাই চেয়ে,
দূর হতে শুনি স্রোতে তরণী-বাওয়া।
যেখানে হল না খেলা সে খেলাঘরে
আজি নিশিদিন মন কেমন করে।
হারানো দিনের ভাষা স্বপ্নে আজি বাঁধে বাসা,
আজ শুধু আঁখিজলে পিছনে চাওয়া।
১৯২
আমার প্রাণের ’পরে চলে গেল কে
বসন্তের বাতাসটুকুর মতো।
সেযে ছুঁয়ে গেল, নুয়ে গেল রে—
ফুল ফুটিয়ে গেল শত শত।
সে চলে গেল, বলে গেল না—সে কোথায় গেল ফিরে এল না।
সে যেতে যেতে চেয়ে গেল কী যেন গেয়ে গেল—
তাই আপন-মনে বসে আছি কুসুমবনেতে।
সে ঢেউয়ের মতন ভেসে গেছে, চাঁদের আলোর দেশে গেছে,
যেখান দিয়ে হেসে গেছে, হাসি তার রেখে গেছে রে—
মনে হল আঁখির কোণে আমায় যেন ডেকে গেছে সে।
আমি কোথায় যাব, কোথায় যাব, ভাবতেছি তাই একলা বসে।
সে চাঁদের চোখে বুলিয়ে গেল ঘুমের ঘোর।
সে প্রাণের কোথায় দুলিয়ে গেল ফুলের ডোর।
কুসুমবনের উপর দিয়ে কী কথা সে বলে গেল,
ফুলের গন্ধ পাগল হয়ে সঙ্গে তারি চলে গেল।
হৃদয় আমার আকুল হল, নয়ন আমার মুদে এল রে—
কোথা দিয়ে কোথায় গেল সে।