উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র/কবিতা ও গান/গ্রীষ্মের গান
অবয়ব
(পৃ. ৭৯৩)
গ্রীষ্মের গান
বড় গরম! ভারি গরম! ঠাণ্ডা সরবৎ আনো!
হাত পা কেমন করছে ছন্ছন্! জোরে পাখা টানো!
খালে বিলে নাই রে জল, সব শুকিয়ে গেল!
তাতে মাটি ফাটে কাঠ, গ্রীষ্ম ঐ রে এল!
নৌকা নাহি চলে আর হায় রে টানাটানি।
মাঝি মাল্লা বলে ‘আল্লা! গাঙ্গে নাইকো পানি।’
বুনো হাঁস বলে, ‘মোর মাথা গেল তেতে।
এই বেলা সেই ঠাণ্ডা দেশে পলাই উত্তরেতে।’
মহিষ গরু যত ছিল, গেল রোগা হয়ে—
দেশে নাহি মিলে ঘাস, বাঁচে কিবা খেয়ে।
ঠাণ্ডা মাটি আগুন হল, তেতে গেল হাওয়া।
ঘরে বসে রাখি প্রাণ, রইল পথে যাওয়া।
হাঁ করিয়া থাকে শালিক বসে মনোদুঃখে—
শুকায়েছে গলা তার কথা নাহি মুখে!
গ্রীষ্মে লোকে বলে ‘ভাই, কেন তুমি এলে?’
গ্রীষ্ম বলে ‘এনু তাই আম খেতে পেলে!
দুটো মাস থাক এই গরমেরে সয়ে—
ফল শস্য পাকে যদি, খাবে খুশি হয়ে।’