বিষয়বস্তুতে চলুন

উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র/মহাভারতের কথা/উতঙ্ক

উইকিসংকলন থেকে

উতঙ্ক

 বেদের আর একটি শিষ্য ছিলেন, তাঁহার নাম উতঙ্ক। একবার বেদ উতঙ্কের উপর সংসার দেখিবার ভার দিয়া বিদেশে গেলেন। উতঙ্ক অতিশয় বুদ্ধিমান এবং ধার্মিক লোক ছিলেন। গুরু বিদেশে থাকার সময় তিনি এমন সুন্দর করিয়া তাঁহার সংসারের কাজ চালাইলেন যে, অল্প লোকেই তেমন করিতে পারে। বেদ বিদেশ হইতে ফিরিয়া দেখিলেন, উতঙ্ক কোন বিষয়েই কোনরূপ ত্রুটি করেন নাই। বরং কোন কোন কঠিন বিষয়ে আশ্চর্যরূপ বিবেচনার সহিত কাজ করিয়াছেন। ইহাতে তিনি যার পর নাই আহ্লাদিত হইয়া বলিলেন, “বৎস উতঙ্ক, তোমার ব্যবহারে আমি বড়ই সন্তুষ্ট হইয়াছি। তোমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হউক তুমি সকল বিদ্যা লাভ করিয়া সুখে গৃহে গমন কর।”

 গুরুর কথা শুনিয়া উতঙ্ক বিনয়ের সহিত বলিলেন, “ভগবন্, আমি আপনাকে কিঞ্চিৎ দক্ষিণা দিতে প্রার্থনা করি। আমি শুনিয়াছি যে, বিদ্যা লাভ করিয়া দক্ষিণা না দিলে গুরুরও অনিষ্ট হয়, শিষ্যেরও অনিষ্ট হয়। অতএব, কিরূপ দক্ষিণা আনিব, অনুমতি করুন।”

 বেদ বলিলেন, “আচ্ছা, আর-এক সময় বলিব।”

 তারপর বেদ দক্ষিণার কথা ভুলিয়া গেলেন। তাহা দেখিয়া উতঙ্ক আর-একদিন তাঁহাকে বলিলেন, “গুরুদেব, কিরূপ দক্ষিণা আনিব অনুমতি করুন।”

 বেদ সাধাসিধা মানুষ। তিনি হয়ত উতঙ্কের ব্যবহারেই যথেষ্ট দক্ষিণা পাইয়াছেন মনে করিয়াছিলেন, তাই তাহার কথা তিনি ভাবেন নাই। উতঙ্ক দক্ষিণা দিবার জন্য পীড়াপীড়ি করিতেছে দেখিয়া তাঁহাকে সন্তুষ্ট করিবার নিমিত্ত কিঞ্চিৎ দক্ষিণা লওয়া তাঁহার উচিৎ মনে হইল, কিন্তু কি চাহিবেন ঠিক করিতে পারিলেন না। শেষে বলিলেন, “তোমার উপাধ্যায়ানীকে (গুরুপত্নীকে) বল। তিনি যাহা চাহেন সেই দক্ষিণ আনিয়া দাও।”

 তখন উতঙ্ক উপাধ্যায়ানীর নিকট গিয়া বলিলেন, “মা, গুরুদেব আমাকে গৃহে যাইতে অনুমতি দিয়াছেন। আমি কিছু দক্ষিণা দিয়া যাইতে চাহি, অনুমতি করুন কি আনিব।”

 উপধ্যায়ানী বলিলেন, “বাছা, মহারাজ পৌয্যের রানী যে দুটি আশ্চর্য কুণ্ডল পরেন সেই কুণ্ডল দুটি আমাকে আনিয়া দাও। আর তিনদিন পরে একটা ব্রত হওয়ার কথা আছে। সেদিন খুব ঘটা করিয়া ব্রাহ্মণ-ভোজন হইবে; সেইদিন ঐ কুণ্ডল পরিয়া আমি পরিবেশন করিতে চাহি। তাহার পূর্বে কুণ্ডল আনিয়া দিতে পারিলেই তোমার মঙ্গল নচেৎ কষ্ট পাইবে।”

 উতঙ্ক তখন কুণ্ডল আনিতে যাত্রা করিলেন। খানিক দূর গিয়া তিনি দেখিলেন যে, একজন অতি প্রকাণ্ড পুরুষ এক বিশাল ষাঁড়ের উপর চড়িয়া, পথের মাঝখানে দাঁড়াইয়া আছে। প্রকাণ্ড পুরুষ উতঙ্ককে সেই ষাঁড়ের গোবর দেখাইয়া বলিলেন, “উতঙ্ক, তুমি উহা আহার কর।”

 এ কথায় উতঙ্ক নাক মুখ সিঁটকাইয়া বলিলেন, “ওয়াক্‌! থু! আমি তাহা পারিব না।”

 তাহাতে প্রকাণ্ড পুরুষ বলিলেন, “ভয় পাইও না! তুমি নিশ্চিন্তে আহার কর। তোমার গুরুও একবার উহা খাইয়াছিলেন।”

 গুরু যখন পূর্বে এ কাজ করিয়াছেন, তখন ত আর উতঙ্কের তাহাতে কোন আপত্তিই থাকিতে পারে না। আর সেই লোকটির বিশাল দেহ দেখিয়া তাঁহারা একটু ভ্যাবাচেকাও লাগিয়া থাকিবে! কাজেই তিনি আর বিলম্ব না করিয়া জলযোগে বসিয়া গেলেন; সে কাজ শেষ হইলে তাড়াতাড়ি মুখ হাত ধুইয়া আবার পথ চলিতে লাগিলেন।

 পৌষ্যের রাজসভায় উপস্থিত হইয়া, উতঙ্ক তাঁহাকে আশীর্বাদ পূর্বক কুণ্ডল চাহিলে পৌষ্য বলিলেন, “আপনি রাণীর নিকটে গিয়া উহা চাহিয়া লউন।”

 এ কথায় উতঙ্ক বাড়ির ভিতরে গেলেন, কিন্তু সেখানে রাণীকে দেখিতে পাইলেন না। ইহাতে তিনি আশ্চর্য হইয়া রাজার নিকট আসিয়া বলিলেন, “মহারাজ আপনি বুঝি আমাকে ফাঁকি দিয়াছেন? আমি ত সেখানে রাণীকে দেখিতে পাইলাম না।”

 রাজা বলিলেন, “আমি আপনাকে ফাঁকি দিই নাই। আমার রাণী এমন ধার্মিক, আর তাঁহার মন এতই পবিত্র যে, অশুচি লোকে তাঁহাকে দেখিতে পায় না। আমার বোধহয় কোন কারণে আপনি অশুচি হইয়াছেন।”

 তখন উতঙ্কের মনে হইল যে, তাড়াতাড়ির ভিতরে, পথে জলযোগের পর আঁচানটা তেমন ভালো করিয়া হয় নাই। এই ভাবিয়া তিনি খুব ভালো মত আচমন করিয়া, অন্তঃপুরে যাওয়ামাত্র রাণীর দেখা পাইলেন।

 রাণী জানিতেন, উতঙ্ক খুব সাধু লোক আর দানের উপযুক্ত পাত্র। সুতরাং উতঙ্ক চাহিবামাত্র তিনি আহ্লাদের সহিত কুণ্ডল দুটি খুলিয়া তাঁহার হাতে দিলেন, আর বলিয়া দিলেন, “খুব সাবধান হইয়া কুণ্ডল লইয়া যাইবেন। তক্ষক নাগ এ কুণ্ডল পাইবার জন্য অনেক চেষ্টা করিয়াছিল। যাইবার সময় সে আপনার অনিষ্ট করিতে পারে।”

 উতঙ্ক বলিলেন, “কোন ভয় নাই। তক্ষক আমার কি করিবে?”

 এই বলিয়া তিনি সেখান হইতে যাত্রা করিলেন। অনেক দূরে পথচলার পর তিনি একটি সরোবরের ধারে উপস্থিত হইয়া, মনে মনে চিন্তা করিলেন যে, এখন বেলাও হইয়াছে। আর সরোবরের জলও অতি পরিষ্কার; সুতরাং এইখানে স্নান আহ্নিক করিয়া লই। তারপর তিনি কুণ্ডল দুটি সরোবরের ধারে রাখিয়া সবে জলে নামিয়াছেন এমন সময় কোথা হইতে এক ক্ষপণক (বৌদ্ধ সন্ন্যাসী) আসিয়া সেই কুণ্ডল লইয়া ছুট দিল।

 উতঙ্কও স্নান আহ্নিক শেষ করিয়া প্রাণপণে চোরের পিছু পিছু ছুটিলেন, তিনি ছুটিতেও পারিতেন যেমন তেমন নয়। সোজা পথে হইলে চোরকে ধরিয়া কুণ্ডল কাড়িয়া লইতে তাঁহার কোন কষ্টই হইত না। কিন্তু সে দুষ্ট চোর যখন দেখিল যে, আর ছুটিয়া কুলাইতে পারিতেছে না, তখন সে হঠাৎ একটা সাপ হইয়া গেল। তাহার সঙ্গে যখন সেখানে একটা গর্ত দেখা দিল, আর সাপটা তাহার ভিতরে ঢুকিয়া গেল, তখন আর উতঙ্কের বুঝিতে বাকি রহিল না যে, ঐ সাপই তক্ষক।

 এখন উপায় কি হইবে? তক্ষক পাতালে থাকে সে সেই গর্তের ভিতর দিয়া সেখানে চলিয়া গিয়াছে। গর্ত যদি বড় হইত, তবে উতঙ্ক নিজেও তাহার ভিতর দিয়া পাতালে যাইতে পারিতেন। কিন্তু উহা এতই সরু যে, তাঁহার লাঠিটাও ভালো করিয়া তাহার ভিতরে ঢোকে না। যাহা হউক, উতঙ্কের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। গর্তটাকে বড় করিবার জন্য তিনি তাঁহার লাঠিগাছ দিয়াই প্রাণপণে খোঁচাইতে লাগিলেন।

 উতঙ্কের এইরূপ অবস্থা দেখিয়া ইন্দ্রের বড়ই দয়া হইল। তিনি তাঁহার বজ্রকে আদেশ করিলেন, “তুমি ঐ ব্রাহ্মণের লাঠির ভিতরে ঢুকিয়া তাহার সাহায্য কর।”

 বজ্র যে কখন গিয়া লাঠির ভিতরে ঢুকিয়াছে, উতঙ্ক তাহার কিছুই জানেন না। তিনি হঠাৎ একবার দেখিলেন যে, তাঁহার লাঠির এক খোঁচাতেই প্রকাণ্ড একটা গর্ত হইয়া গেল। সেই গর্তের ভিতরে ঢুকিয়া আর-এক খোঁচা মারিতেই, আরো অনেকখানি গর্ত হইয়া গেল। তারপর কি আর তিনি ছুটিয়া কুলাইতে পারেন? লাঠি সামনে ধরিয়া তিনি যতই ঊর্ধ্বশ্বাসে ছোটেন, গর্ত ততই যেন আপনা আপনিই বাড়িয়া যায়, এমনি করিয়া উতঙ্ক দেখিতে দেখিতে একেবারে পাতালে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। সেখানকার শোভার কথা কি বলিব। এমন সুন্দর বাড়ি ঘর, মঠ মন্দির, আর ঘাট আমরা কেহ কখনো দেখি নাই।

 উতঙ্কের তখন শোভা দেখিবার অবসর ছিল না। তিনি কুণ্ডলের সন্ধানে ব্যস্ত হইয়া ছুটিয়া আসিয়াছিলেন, সুতরাং সেই কুণ্ডলটি ফিরাইয়া দিবার জন্য চিৎকার পূর্বক সর্পগণের স্তব করিতে লাগিলেন। কিন্তু সাপেরা কেহ তাঁহার কথায় কানই দিল না।

 ইহাতে নিতান্ত দুঃখিত হইয়া উতঙ্ক চারিদিকে তাকাইতেছেন, এমন সময় তিনি দেখিলেন যে, দুটি স্ত্রীলোক একটা তাঁতে কাপড় বুনিতেছে;সেই কাপড়ে সাদা সূতার টানা আর কালো সূতার প’ড়েন। একটা চাকায় বারটি খুঁটি,ছয়টি শিশু সেই চাকা ঘুরাইতেছে। তাহাদের নিকট সুন্দর একটি ঘোড়ার উপবে, একজন উজ্জল পুরুষ বসিয়া আছেন।

 ইঁহাদিগকে দেখিয়া উতঙ্কের বড়ই আশ্চর্য বোধ হওয়াতে, তিনি ইঁহাদের সকলেরই স্তব করিতে লাগিলেন। স্তব শুনিয়া সেই উজ্জল পুরুষ বলিলেন, তোমার স্তবে অতিশয় সন্তুষ্ট হইয়াছি তুমি কি চাহ?”

 উতঙ্ক অমনি হাত জোড় করিয়া বলিলেন, “মহাশয়, যদি দয়া করিয়া সাপ গুলিকে আমার বশ করিয়া দিতে পারেন, তবে আমার বড় উপকার হয়।”

 উজ্জল পুরুষ বলিলেন, “আচ্ছা তুমি এই ঘোড়ার পিছনে দাঁড়াইয়া ক্রমাগত ইহার গায়ে ফুঁ দিতে থাক।”

 এ কথায় উতঙ্ক সেই ঘোড়ার পিছন হইতে প্রাণপণে ফুঁ দিতে আরম্ভ করিলে, তাহার শরীর হইতে রাশি রাশি ধোঁয়া, আর নাক, কান, চোখ এবং মুখ দিয়া হুস্ হুস্ শব্দে ভয়ঙ্কর আগুন বাহির হইতে লাগিল। দেখিতে দেখিতে সেই ঝাঁঝাল ধোঁয়া সাপদের নাক চোখ মুখের ভিতর ঝুঁকিয়া, তাহাদিগকে হাঁচাইয়া, কাঁদাইয়া, আর কাশাইয়া, তাহাদের দুর্দশার এক শেষ করিল। তখন আর তাহারা ঘরের ভিতরে টিকিতে না পারিয়া, যেই হাঁপাইতে হাঁপাইতে বাহিরে আসিয়াছে অমনি সেই ভয়ঙ্কর আগুন তাহাদিগকে পোড়াইতে লাগিল।

 তখন তক্ষক প্রাণের ভয়ে জড়সড় হইয়া তাড়াতাড়ি কুণ্ডল হাতে উতঙ্কের নিকট আসিয়া কাশিতে কাশিতে বলিল, “ঠাকুর, এই নিন আপনার কুণ্ডল।”

 উতঙ্ক কুণ্ডল পাইয়া যার পর নাই আনন্দিত হইলেন, কিন্তু তাঁহার সে আনন্দ অধিকক্ষণ রহিল না;কারণ তিনি তখনই হিসাব করিয়া দেখিলেন যে, সেইদিনই তাঁহার উপধ্যায়ানীর ব্রত আরম্ভ হইবে, সুতরাং সময় থাকিতে সেখানে পৌঁছান একেবারেই অসম্ভব।

 উতঙ্কের ভাবনা কথা জানিতে পারিয়া সেই উজ্জ্বল পুরুষ বলিলেন, “উতঙ্ক, তোমার কোন চিন্তা নাই, আমার এই ঘোড়ায় চড়িয়া তুমি এই মুহুর্তেই তোমাব গুরুর বাড়িতে উপস্থিত হইতে পারিবে।”

 এই কথা বলিয়া সেই দয়াবান্ উজ্জ্বল পুরুষ উতঙ্ককে তাঁহার ঘোড়ায় চড়াইয়া দিলে, তিনি চক্ষুর নিমেষে গুরুগৃহে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। উপাধ্যায়ানী ততক্ষণে স্নান আহ্নিক সারিয়া চুল বাঁধিতে বসিয়াছিলেন। আর উতঙ্কের বিলম্ব দেখিয়া মনে করিতে ছিলেন, ‘উহাকে শাপ দিই; এমন সময় উতঙ্ক আসিয়া তাঁহাকে প্রণামপূর্বক কুণ্ডল দিবামাত্র,তাঁহার রাগের বদলে মুখ দিয়া হাসি বাহির হইয়া গেল। তিনি অতিশয় আনন্দের সহিত উতঙ্কের হাত হইতে কুণ্ডল লইয়া বলিলেন, “ভালো আছ ত বাপ? বড় সময়ে আসিয়া দেখা দিয়াছ। আমি এখনই তামাকে শাপ দিতেছিলাম—ভাগ্যিস্ দিই নাই! এখন আশীর্বাদ করি, তোমার মঙ্গল হউক, তুমি চিরজীবী হইয়া সুখে থাক।”

 এইরূপে উতঙ্ক উপাধ্যায়ানীকে সন্তুষ্ট করিয়া বেদের নিকট আসিয়া তাঁহাকে প্রণাম করিলে, তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, “ভালো আছ ত বৎস? এত বিলম্ব করিলে কেন?”

 এ কথার উত্তরে, উতঙ্ক তক্ষকের হাতে নিজের লাঞ্ছনার কথা সমস্তই গুরুকে জানাইয়া, বলিলেন, “গুরুদেব, পাতলে গিয়া আমি দেখিলাম, দুটি স্ত্রীলোক সাদা সূতায় আর কালো সূতায় কাপড় বুনিতেছে। আর ছয়টি ছেলে বারটি খুঁটি দেওয়া একখানি চাকা ঘুরাইতেছে আর-একজন অতি উজ্জ্বল পুরুষ ঘোড়ায় চড়িয়া আছে। যাইবার সময় পথে এক ষাঁড়ের উপরে একজন পুরুষকে দেখিয়াছিলাম। তিনি আমাকে বড়ই নোংরা জিনিস খাওয়াইলেন, আর বলিলেন, আপনাকেও নাকি তাহা খাওযাইয়াছেন। আমি ত ইহাদের কাহাকেও চিনিতে পারিলাম না; ইঁহারা কে?”

 বেদ বলিলেন, “বৎস, ঐ স্ত্রী লোক দুটি জীবাত্মা আর পরমাত্মা। চাকাখানি বৎসর, বারটি খুঁটি বার মাস, ছেলে ছয়টি ছয় ঋতু উজ্জ্বল পুরুষ পর্জন্য; ঘোড়াটি অগ্নি। পথে যে ষাঁড় দেখিয়াছ, তাহা ঐরাবত, তাহার উপরে যিনি ছিলেন, তিনি ইন্দ্র; আর তুমি যাহা খাইয়াছিলে, তাহা অমৃত। ইন্দ্র আমার বন্ধু, তাই তিনি দয়া করিয়া তোমাকে অমৃত খাওয়াইয়াছিলেন; নহিলে, সাপের দেশ হইতে তোমার বাঁচিয়া আসা ভার হইত। এখন আশীর্বাদ করি, তোমার মঙ্গল হউক, তুমি মনের সুখে ঘরে চলিয়া যাও।”

 গুরুকে ভক্তির সহিত প্রণাম করিয়া উতঙ্ক তাঁহার নিকট বিদায় হইলেন, কিন্তু তিনি দেশে না গিয়া, গেলেন সটান হস্তিনায়, জনমেজয়ের কাছে। তক্ষকের উপর তাঁহার যে খুবই রাগ হইয়াছিল, এ কথা কেহ না বলিয়া দিলেও আমরা অনুমান করিয়া লইতে পারিতাম। সেই দুষ্ট তক্ষককে সাজা দিবার জন্যই, তাঁহার জনমেজয়ের নিকট যাওয়া। তাহার ফল কি হইয়াছিল তাহা আমরা জানি।