বিষয়বস্তুতে চলুন

উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র/মহাভারতের কথা/দেবতা আর অসুরের কথা

উইকিসংকলন থেকে

দেবতা আর অসুরের কথা

 অদিতি আর দিতি কশ্যপের স্ত্রী ছিলেন। অদিতির পুত্র ধাতা, মিত্র অর্যমা, শত্রু, বরুণ, অংশ, ভগ, বিবস্বান্, পূষা, সবিতা, ত্বষ্টা, বিষ্ণু এই বারজন। অদিতির পুত্র বলিয়া ইঁহাদিগকে আদিত্য বলে। দেবতারা ইঁহাদের দলের লোক৷

 দিতির পুত্র হিরণ্যকশিপু। দিতির সন্তান বলিয়া ইঁহার বংশের লোকদিগকে দৈত্য বলে। অসুরেরা ইহাদের দলের লোেক৷

 সকল দেবতাই অদিতির সন্তান নহে, সকল অসুরও দিতির সন্তান নহে। ইঁহাদের সকলের পিতামাতার সংবাদ লইবার আমাদের কোন প্রয়োজন নাই। তবে, আমাদের এই কথাটা বিশেষ করিয়া জানা দরকার যে, দেবতা আর অসুরদিগের মধ্যে ভয়ানক শত্রুতা ছিল। অসুরেরা চাহিত যে, দেবতাদিগকে তাড়াইয়া দিয়া, তাহারাই স্বর্গের রাজা হইবে। দেবতাদেরও সর্বদাই এই চেষ্টা ছিল যে, কি করিয়া তাঁহারা অসুরদিগকে মারিয়া স্বর্গটাকে নিজের হাতে রাখিবেন।

 যখন ভাল কবিয়া সৃষ্টির কাজ আরম্ভ হয় নাই, তখন হইতেই দানবেরা দেবতাদিগকে জ্বালাতন করিতে আরম্ভ করিয়াছিল।

 ব্রহ্মা যখন সৃষ্টি আরম্ভ করেন, তখন তিনি একটা পদ্মের ভিতরে বাস করিতেন। তখন জল ছাড়া আর কিছুই ছিল না, সেই জলের উপরে নারায়ণ অনন্ত শয্যায়[] নিদ্রা যাইতেছিলেন। সে সময়ে নারায়ণের নাভি হইতে একটি পদ্ম বাহির হয়, তাহারই ভিতরে ব্রহ্মার বাসা ছিল। ইহার মধ্যে কখন নারায়ণের হাত হইতে দুই বিন্দু জল আসিযা, সেই পদ্মের উপরে পড়ে। তাহা দেখিয়া নাবায়ণ বলেন—

 “এই দুই বিন্দু জল হইতে দুইটা দৈত্য বাহির হউক।”


  1. অনন্ত একটি সাপ, তাহার এক হাজারটা মাথা। এই সাপের উপরে নাবায়ণ ঘুমাইতেছিলেন।