কড়ি ও কোমল/পত্র ১

উইকিসংকলন থেকে

পত্র।

শ্রীমতী ইন্দিরা। প্রাণাধিকা।
   ষ্টীমার। খুলনা।

মাগাে আমার লক্ষ্মী,
মনিষ্যি না পক্ষী!
এই ছিলেম তরীতে,
কোথায় এ ত্বরিতে!
কাল ছিলেম খুলনায়,
তাতে ত আর ভুল নাই,
কল্‌কাতায় এসেছি সদ্য,
বসে বসে লিখ্‌চি পদ্য।


তােদের ফেলে সারাটা দিন
 আছি অমনি এক্‌-রকম্‌,
খােপে বসে পায়রা যেন
 কর্‌চি কেবল বক্‌বকম্‌।

বৃষ্টি পড়ে টুপুর্ টুপুর্
মেঘ করেছে আকাশে,
উধার রাঙা মুখখানি গো
কেমন যেন ফ্যাকাসে!
বাড়িতে যে কেউ কোথা নেই
দুওর গুলো ভ্যাজানো,
ঘরে ঘরে খুঁজে বেড়াই
ঘরে আছে কে যেন!
পক্ষীটি সেই ঝুপ‍্সি হয়ে
ঝিমচ্চেরে খাঁচাতে,
ভুলে গেছে নেচে নেচে
পুচ্ছটি তার নাচাতে!
ঘরের কোণে আপন মনে
শূন্য পোড়ে বিছেনা,
কাহার তরে কেঁদে মরে
সে কথাটা মিছে না!
বইগুলো সব ছড়িয়ে পোড়ে,
নাম লেখা যায় কার গো!

এম‍্নি তারা রবে কি রে
খুল‍বে না কেউ আর গো!
এটা আছে সেটা আছে
অভাব কিছু নেই
স্মরণ ক’রে দেয়রে যারে
থাকেনাক সেই ত!

বাগানে ঐ দুটো গাছে
ফুল ফুটেছে রাশি রাশি,
ফুলের গন্ধে মনে পড়ে
যা’রে যা’রে ভালবাসি।
ফুলের গন্ধে মনে পড়ে।
ফুল কে আমায় দিত মেলা,
বিছেনায় কার মুখটি দেখে
সকাল হত সকালবেলা!
জল থেকে তুই আস‍বি কবে
মাটির লক্ষ্মী মাটিতে

ঠাকুর বাবুর ছয় নম্বর
যোড়াসাঁকোর বাটিতে!

ইষ্টিম্ ঐ রে ফুরিয়ে এল
নোঙর তবে ফেলি অদ্য।
অবিদিত নেইত তোমার
রবিকাকা কুঁড়ের হদ্দ!
আজ‍্ক‍ে না কি মেঘ করেছে
ঠেক‍্চে কেমন ফাঁকা-ফাঁকা,
তাই খানিকটা ফোঁসফোঁসিয়ে
বিদায় হল—
রবি কাকা!
কলিকাতা।