বিষয়বস্তুতে চলুন

কথামালা (১৯৪৪)/একচক্ষু হরিণ

উইকিসংকলন থেকে

একচক্ষু হরিণ।

এক একচক্ষু হরিণ, সতত নদীর তীরে চরিয়া বেড়াইত। নদীর দিকে ব্যাধ আসিবার আশঙ্কা নাই এই স্থির করিয়া, নিশ্চিন্ত হইয়া, স্থলের দিকে ব্যাধ আসিবার ভয়ে, সে সতত সেই দিকে দৃষ্টি রাখিত। দৈবযোগে, এক দিবস, কোনও ব্যাধ নৌকায় চড়িয়া যাইতেছিল। সে দূর হইতে ঐ হরিণকে চরিতে দেখিয়া, উহাকে লক্ষ্য করিয়া, শর-নিক্ষেপ করিল। হরিণ মনে মনে এই ভাবিয়া প্রাণত্যাগ করিল, আমি যেদিকে বিপদের আশঙ্কা করিয়া, সর্ব্বদা সতর্ক থাকিতাম, সেদিকে বিপদের কোন কারণ উপস্থিত হইল না; কিন্তু যেদিকে বিপদের আশঙ্কা নাই ভাবিয়া, নির্ভাবনায় ছিলাম, সেই দিক্ হইতেই শত্রু আসিয়া আমার প্রাণসংহার করিল।

একচক্ষু—একটী চক্ষুবিশিষ্ট।
নিশ্চিন্ত—নির্ভাবনা, চিন্তাশূন্য।
দৈবযোগে—হঠাৎ, সহসা।
প্রাণত্যাগ করিল—মরিল।
নির্ভাবনায়—ভয়শূন্য মনে।

নদীতীরে—নদীর ধারে।
দৃষ্টি—নজয়।
লক্ষ্য—তাগ, উদ্দেশ।
সতর্ক—সাবধান।
প্রাণসংহার—জীবনবিনাশ, প্রাণবধ