গীতিমাল্য/৪
স্থিরনয়নে তাকিয়ে আছি
মনের মধ্যে অনেক দূরে।
ঘোরাফেরা যায় যে ঘুরে।
গভীরধারা জলের ধারে,
আঁধার-করা বনের পারে,
সন্ধ্যামেঘে সোনার চূড়া
উঠেছে ঐ বিজন পুরে
মনের মাঝে অনেক দূরে॥
দিনের শেষে মলিন আলোয়
কোন্ নিরালা নীড়ের টানে
বিদেশবাসী হাঁসের সারি
উড়েছে সেই পারের পানে।
ঘাটের পাশে ধীর বাতাসে
উদাস ধ্বনি উধাও আসে,
বনের ঘাসে ঘুম-পাড়ানে
তান তুলেছে কোন্ নূপুরে
মনের মাঝে অনেক দূরে॥
নিচল জলে নীল নিকষে
সন্ধ্যাতারার পড়ল রেখা,
পারাপারের সময় গেল
খেয়াতরীর নাইকো দেখা।
পশ্চিমে ঐ সৌধছাদে
স্বপ্ন লাগে ভগ্ন চাঁদে,
একলা কে যে বাজায় বাঁশি
বেদনভরা বেহাগ সুরে
মনের মাঝে অনেক দূরে॥
সারাট দিন দিনের কাজে
হয় নি কিছুই দেখাশোনা,
কেবল মাথার বোঝা ব’হে
হাটের মাঝে আনাগোনা।
এখন আমায় কে দেয় আনি
কাজ-ছাড়ানো পত্রখানি;
সন্ধ্যাদীপের আলোয় ব’সে
ওগো আমার নয়ন ঝুরে
মনের মাঝে অনেক দূরে॥