ধূলিরাশি/স্নেহনিমন্ত্রণ
স্নেহ-নিমন্ত্রণ।
“Come unto me, all ye that labour and are heavy laden, and I will give you rest.” Matt. xi. 28.
“এস এস পরিশ্রান্ত নিকটে আমার,
আমি দিব বিরাম তোমায়।
এস যত ভারাক্রান্ত ল'য়ে পাপভার,
তৃপ্ত হবে তাপিত হৃদয়॥”
কত যে আদরে কত স্নেহ করে,
ডাকিছেন যীশু স্নেহের কোলে।
তাজিয়া সংসার মায়ার স্বপন,
এসগো সকলে থেকো না ভুলে॥
গভীর নিশীথে যবে নিদ্রা আসি,
অলীক বিয়ামে ভুলায় নরে।
তখন(ও) তখন (ও) সেই স্নেহ-স্বর,
ডাকিছে দাঁড়ায়ে হৃদয়-দ্বারে॥
“আমিই সত্যতা, পথ, অনন্ত জীবন,
আমা বিনা নাহি অন্য আর।
অবারিত তব তরে অনুতাপি-জন,
সীমাহীন স্নেহের দুয়ার॥”
বহিছে ঝটিকা? যাক্ না বহিয়ে,
যীশু যে তোমার কিসের ভয়?
ঘন মেঘরাশি ঢাকিছে তপন?
হৃদয় যে তব আলোকময়॥
সংসার-সাগরে বড় ক্লান্ত মন,
মূরছি পড়িছে অবশ প্রায়?
ভরঙ্গলহরী গরজিয়ে ঘোর,
আঘাতিছে বুঝি নিয়ত তা’য়?
উঠুক উঠুক ঝটিকা ভীষণ,
পড়ুক ঊরমি ঊরমি’ পরে।
ডাকিছেন যীশু সান্ত্বনা-বচনে,
চির পরিচিত স্নেহের স্বরে॥
“এস এস পরিশ্রান্ত, নিকটে আমার,
আমি দিব বিরাম তোমায়।
এস যত ভারাক্রান্ত ল’য়ে পাপভার,
তৃপ্ত হবে তাপিত হৃদয়॥
“এই যে ঝটিকারাশি, নহে নিরাশার,
ধরিয়াছে যাহারা আমারে।
পড়িতেছে আবরিত আশিস্ আমার,
তাহাদের মঙ্গলের তরে॥
“সংসার-সাগরে প্রতি তরঙ্গ আঘাত,
আনে আর(ও) নিকটে আমার।
ধরিয়া রয়েছি তব দুরবল হাত,
আমি সাথে,—কি ভয় তোমার?”
যীশুর শরণ ল’য়েছে যাহারা,
কেহ নহে সুখী তাদের সম॥
নিবিলেও সব, হবে না নিরাশ,
জানে যে এ পারে সকলি ভ্রম॥
আছে যে তা’দের সুখের ভবন,
জীবন নদীর উজল তীরে।
আছে শান্তিময় জুড়াবার স্থান,
ঝটিকা-ভাতি মানব তরে॥
আছে সেথা পুণ্য জীবনের জল,
পান করি’ হবে শীতল প্রাণ।
পিপাসা ও শ্রান্তি পলাইবে দূরে,
গাহিবে যীশুর মহিমা গান॥
তখন(ও) নাচিবে সেই উর্ম্মিমালা,
গরজিবে মেঘ আকাশ তলে।
দু দিনের এই দুখময় স্মৃতি,
ডুবিবে অতল বিস্মৃতি জলে॥
পড়োনা পড়োনা মূর্চ্ছিত হইয়ে,
যীশুর শরণ ল’য়েছ যা’রা।
ক্ষণিকের এই মেঘরাশি হেরে,
হ’য়োনা আতঙ্কে আপনাহারা॥
শুন! শুন! এই অসার জগতে,
ডাকিছেন যীশু করুণাময়।
স্বর্গ-অধিপতি হে পাপিগণে,
ডাকিছেন,—তবে কিসের ভয়?
“এস এস পরিশ্রান্ত, নিকটে আমার,
আমি দিব বিরাম তোমায়।
এস যত ভারাক্রান্ত ল’য়ে পাপভার,
তৃপ্ত হ’বে তাপিত হৃদয়॥”