পঞ্চক মালা/মায়াদেবীর দেবপূজা
“বুদ্ধবীর, নমোত্য-ৎথু, সব্ব সত্তানামুত্তম,
যো মং দুক্খা পমোচসি, অঞ্ঞ্ম্ চ বহুকং জনম্।”
“অগ্নিদেব, দেব প্রভাকর,
স্বর্ণ বর্ণে প্রদীপ্ত সুন্দর!
পুণ্যতাপে দগ্ধ করা পাপ।
সুখসিন্ধু-নিধি চন্দ্র তারা,
কিরণেতে করুণার ধারা
বরষিয়ে হরিও সন্তাপ।”
শুচিস্মাতা মায়াদেবী, কৌষিক বসনে
উজলি’ সুবর্ণ কান্তি, বসি কুশাসনে-
বিরচি অঞ্জলি রক্ত করা-পদ্ম-দলে,
শুক-সুকোমল কণ্ঠ বেড়িয়া অঞ্চলে—
স্তুতি-অন্তে প্রণামিয়া দেবতা-চরণে
স্তম্ভিত করিলা দৃষ্টি আয়ত নয়নে।
নিজ হাতে রাজরাণী ভিখারীর হাতে
দিবেন। বসন অন্ন; তাই, শুভ প্রাতে
দ্বারেতে দরিদ্র কত বসি’ অপেখিয়া—
“দে বসন, দে মা অন্ন” কহিল ডাকিয়া।
বসি’ পুত্রাথিনী দেবী পূজার ভবনে,
শুনিলেন “মা মা” ধ্বনি ভিখারী-বদনে।
মাতৃসম্ভাষণ কর্ণে মধু উগরিল;
“এস বাছা।” বলি যেন প্রাণ উত্তরিল।
উছলিল স্নেহ-সুধা জগতের হিতে।
চলিলেন ধীর পদে ভাবিতে ভাবিতে——
“লালসা-বিলাসে তৃপ্তা নহেরে রমণী;
এ জাবন ধন্য তা’র, হইলে জননী।”
দরিদ্রে বিতরি’ অন্ন বসন সুন্দর,
তৃপ্তি-সুখে পরিপূর্ণ করিয়ে অন্তর,
প্রবেশিতে কক্ষমাকে হেরিলেন রাণী
রাজা শুদ্ধোদন দেবে। বক্ষমাঝে টানি
আদরে চুম্বিয়া স্নাত মুখপদ্ম, পতি
কহিলেন, “একি দেবী-মূর্ত্তি তব সতী!”
মাতৃত্ব-গৌরব-স্বপ্নে পূর্ণ ছিল প্রাণ;
অধর অমৃতসহ করিলেন দান
যৌবন-কুসুম-অর্ঘ্য পতি-পদ-তলে।
ত্রিদিবে দেবতা-বক্ষে জগত-মঙ্গলে
উৎসরিল করুণার বিমল নির্ঝর।
সুলভ প্রীতির মন্ত্রে দেবতার বর।