উৎসর্গ-পত্র।
ক্রাউন অফ ইণ্ডিয়া ।
মহামহিমার্ণবোপম মাদৃশ সুদীন বিধবাকন্যা
পালিকা স্বদেশহিতৈষিণী, কল্পলতিকা-
সদৃশী শ্রীশ্রীমতী মহারাণী স্বর্ণময়ী মহাশয়া
মাদৃশ নিরাশ্রয়া বিধবাকন্যাপালিকাসু ।
- সবিনয নিবেদন ।
মাতঃ! আমি বহু যত্নে এবং বহু চেষ্টায় মহামুনি বাল্মীকির সর্ব্বস্বধন এই অদ্ভুতরামায়ণ গ্রন্থখানি নানাবিধ বাঙ্গালা ছন্দে রচনা করিয়ছি। ইহা ভক্তগণের পরম বস্তু, মুমুক্ষর ভব-সমুদ্র-তরণী, ধার্ম্মিকের পরমবন্ধু, আয্যগণের আদবেব ধন, ভারতের উজ্জ্বল রত্ন। ইহা যেরূপ ভাবে ভাষান্তরিত হওয়া উচিত, আমা দ্বারা তাহার কতদূর হইযাছে, তাহা আমি জানি না , তবে এইমান ভরসা, “ রামনাম” মাধুর্য্যবিহীন নহে। এই নামে ভক্তবৃন্দের হৃদয়-বারিধি সহজেই উচ্ছদিত হইযা উঠে। আমি এই ভরসাতে সাহসী হইয, এই রামনাম ঋক মহাকাব্য ভাষান্তরিত করিয়া একগাছি মালা গ্রন্থন পূর্বক আপনাব গলদেশে ভক্তিভাবে প্রদান করিবার শিমিত্ত নিকটে উপস্থিত হইয় ছি। একবার হৃদয়দেশে ধারণ করি য। আমাকে কৃতার্থ করুন । মাতঃ ! আমি সীমান্ত জ্ঞানসম্পন্ন, ভালরূপ লেখাপড়া শিখিতে পারি নাই । আমি অল্প দিন হইল বিধবা হইয় ছি। এ হতভাগিনীর আর কেহ কোথাও নাই বলিলেও অত্যুক্ত হয ন। কযেকটা বালিক লই । অকুল দুঃখসমুদ্রে ভালমানী। উদরান্নের অন্য কোন উপায নাই । বিষয নাই, বিভব নাই । কাজেই গ্রন্থাদি রচনা অথব| দাসীবৃত্তি ভিন্ন উপায়,কি আছে ? দ্বিতীয় পন্থাপেক্ষ প্রথম পন্থাবলম্বনে নিকটে উপস্থিত হইলাম। নব° বিধব।-তকণী-কুলবালাকে কিঞ্চিৎ কৃপাকটাক্ষ বিতরণে কতার্থ করিতে আজ্ঞ হয । আমার ন্যায় কত শত রমণী আপনার কৃপায় প্রতিপালিত হইতেছে, তবে কেন আমি তাহা হইতে বঞ্চিত হইব । পুস্তক উৎসর্গচ্ছলে জীবন উৎসর্গ করিলাম, প্রতিপালন করতে অজ্ঞ হয়। নিবেদন ইতি। শরণাগত নব্য-ধবা
সন ১২৯৭ সাল। শ্রীমতী সৌদামিনী দেবী |
জ্যৈষ্ঠ। শিবপুর-হাওড়া ।