পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৫০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6 o 8 অধ্যাপক হ’ত ছাত্রের হৃদয়ে, সেখানে অঙ্কুরিত হয়ে তার হৃদয়াকাশে যে ছায়াবৃক্ষ রচনা করত তার প্রতি পত্র দিয়ে সে ছাত্র পান করতে পারত সূর্য্যের কিরণ ধারা অঞ্জলিতে অঞ্জলিতে ; মহোচ্চ আকাশের দিকে হ’ত তার লক্ষ্য, ফলে তার জীবন অধ্যাপকের তপস্যায় হ’ত ফলবান । আমাদের দেশে প্রাচীনকালে গুরুশিষ্যের হৃদয়সন্নিপাতের এই গৃঢ় রহস্যটি ব্যবহার করা হত । এইটির অভাবে শিক্ষা হয়ে পড়ে যান্ত্রিক (mechanical ! একটি আত্মা যে আর একটি আত্মার মধ্যে আপনাকে রোপণ করতে পারে এই মহাতথ্যটি আজকালকার শিক্ষা প্রণালী থেকে একেবারে উঠে গিয়েছে । কিন্তু কানাই যতই অস্তরে অন্তরে স্বজাতার দিকে আকৃষ্ট হতে লাল ততই সে লাগল তার সঙ্গে সমান দৃষ্টিতে সব জিনিষ দেখতে । মুজাত অধ্যাপককে বলত "গুরুদেব’, কানাই বলত অধ্যাপক । কিন্তু ক্রমশঃ অধ্যাপকের প্রতি সুজাতার যে ভালবাসা তা একটা বৈদ্যুতিকশক্তির মত সংক্রাস্ত হ’ল তার হৃদয়ে । সে অধ্যাপককে দেথতে লাগল একট। নূতন দৃষ্টিতে । তাকে অবলম্বন করে উভয়ের রসধারা পেল একটা সমান ক্ষেত্র আপনাকে বিস্তৃত করতে । কোন সময় যে 'অধ্যাপক’-শব্দ তার মুখ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গুরুদেব শব্দে পরিণত হ’ল তা সে জানল না । কানাই অনুকরণ করবার ছেলে নয় । কিন্তু হৃদয়ের যখন হ’ল স্বচ্ছন্দ পরিবর্তন, উপযুক্ত শব্দটিও বেরিয়ে এল তার সঙ্গে ।

একটি পরিবারের মধ্যে স্ত্রীপুরুষের প্রেম যখন ভোগের আওতায় পড়ে ক্রমশঃ আসে ক্ষীণ হয়ে, তারই মধ্যে দেখা দেয় পুত্রকন্যাদের আবির্ভাব । “ বিবাহের প্রথম অবস্থায় পরস্পরের পরস্পরের প্রতি যে দু’টি স্বচ্ছ লীলোৎসারী শ্রোত প্রবাহিত হ’ত, সেটি যখন হয়ে এল