পাতা:অধ্যাপক - সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত.pdf/৫২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( 8 অধ্যাপক কানাই বল্লে—“এ ত প্রেমের অভিশাপ ।” হজাত বল্লে—“এ অভিশাপ নয়, এ বরমাল্য । আমার হৃদয়ের মধ্যে আমি আবিষ্কার করেছি যে এতেই পাওয়া যাবে প্রেমের চির সঞ্জীবনী ।” কানাই রইল স্তব্ধ হয়ে । তার বুকের রক্ত আস্তে আস্তে নেমে আসতে লাগল তার স্বাভাবিক সঞ্চরণে। পৃথিবীতে আবার হ’ল মদনভস্মের অভিনয়, তপস্যার মধ্যে প্রেমের সঞ্জীবন । স্বজাত কানাইয়ের হাতখানি সস্নেহে নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বল্লে—”এই হ’ল আমাদের পাণিগ্রহণ। বিবাহ যেখানে সম্পন্ন হয় বেদীর চারিদিকে সাত পা ফেলে, সেখানে আমরা চলব দুর দিগন্তের যাত্রায়, বিদ্যার বেদীমগুপে, গুরুদেবকে সাক্ষী করে’। র্তারই আদর্শিত পথে আমাদের দু’টি ধারা চিরকাল চলবে পাশাপাশি, চিরকাল করবে পরস্পরকে নিরীক্ষণ, নিরস্তর হবে কাছাকাছি, কিন্তু তাদের যথার্থ মিলন হবে বিদ্যা ও গ্রেমের মহা-অস্তরের মধ্যে । তোমার ব্যক্তিত্ব হবে তোমার মধ্যে সম্পূর্ণ, আমার ব্যক্তিত্ব হবে আমার মধ্যে সম্পূর্ণ, অথচ উভয়ের ব্যক্তিত্ব আমরা পুর্ণ করব উভয়ের আস্বাদনে। গাছের সমস্ত রস যেমন পরিণত হয় মাধুর্য তেমনি আমাদের পরস্পরের দৃষ্টির মধ্যে আমাদের জীবনের সমস্ত উপলব্ধি, সমস্ত আস্বাদন পূর্ণ হবে একটি অমৃতরসের আশ্বাদে । বাইরে সকলে দেখবে দু’টি নদী পৃথক, কিন্তু ভিতরের ফন্তুধারায় আমাদের অস্তরের মধ্যে বইবে একটি স্রোত । আমাদের সেই স্রোতধারার মিলনের মধ্যে ঐগুরুদেবের আশীর্ব্বাদধারী বর্ষিত হবে আমাদের উপরে। পরিবার গঠনের মধ্যে যে প্রাত্যহিক ক্লিয়ত আছে তার থেকে মুক্ত থাকলেই আমাদের হৃদয়ের দু’টি বর্ত্তি জলতে থাকবে উজ্জল হয়ে আমাদের গুরুদেবের আরতির থালাতে ।”