সান্ত্বনা
ননীবালার শ্বশুরবাড়ি বিনোদ কাকার বাড়ির দক্ষিণে। একুশ বছরের অবহেলার চিহ্ন বাড়িটার সর্বদেহে প্রকট হয়ে রয়েছে, উঠোন ঘাস আর কাঁটা ঝোপে ভরে গিয়েছে, দেয়াল ফুঁড়ে একটা বন-ডুমুরের গাছ উঠেছিল—এখন তাতে ফল ধরেচে, কাঁটা লতায় আচ্ছন্ন জানলার পাল্লা প্রায় ঢাকা পড়েচে।
সুরেশ বলতে লাগল—মা, চল—আমরা নিজেদের বাড়িতে যাই। নিজের গাঁয়ে এসে অন্যের বাড়িতে থেকে লাভ কি? আগাছা পরিষ্কার করাতেই তিন দিন লেগে গেল। তারপরে একদিন ননীবালা বাড়িটি দেখতে গেল। এক সারিতে তিনটি ঘর, দু-দিকে বারান্দা, উঠোনের ওপারে রান্নাঘর ও ভাঁড়ার। কত দিন পরে সে এই ভিটেতে আবার পা ফেললে··· দীর্ঘ একুশ বছর—আর তার মধ্যে কত কি ঘটে গিয়েচে।
সুরেশ বলে—এ বাড়িতে বাস করার কথা আমার একদম মনে নেই মা।
দূর বোকা—ননীবালা বকে তাকে—তুই তখন সবে ন মাসের, সেই সময়ে আমরা এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাই।
—আমরা এখন এখানে কিছুদিন থাকব মা, জায়গাটা খুব ভাল লাগচে।
৮২