পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হালুয়া আনিয়া তাহার সামনে বসিল । অপু ক্ষুধার মুখে হালুয়াটুকু গো-গ্রাসে গিলিল। গরম চা খাইতে গিয়া প্রথম চুমুকে মুখ পুড়াইয়া ফেলিয়া ঢালিয়া प्रांब्लिझा थांछेड व्नांशिल। মেয়েট বলিল-আপনি বুঝি ওদের খুড়তুতো ভাই? থাকৃ প্লেটটা এইখানেই-আর একটু হালুয়া আনিব ? —হালুয়া ?--নাঃ-ইয়ে তেমন খিদে নেই-হঁ্যা, সুরেশীদার বাবা আমার জ্যাঠামশাই হতেন, জ্ঞাতি সম্পর্ক এই সময় অতসী ঘরে ঢোকাতে মেয়েটি চায়ের বাটি ও প্লেট লইয়া চলিয়া গেল। { সন্ধ্যার পর ঠাকুরবাড়িতে খাইয়া অনেক রাত্রে সে নিজের থাকিবার স্থানে ফিরিয়া দেখিল আজও একজন লোক সেখানে রাত্রের জন্য আশ্রয় লইয়াছে। মাঝে মাঝে এরকম আসে, কারখানার লোকের দু-একজন আত্মীয়-স্বজন মাঝে মাঝে আসে ও দু-চারদিন থাকিয়া যায়। একে ছোট ঘর, থাকিবার কষ্ট, তাহাতে লোক বাড়িলে এইটুকু ঘরের মধ্যে তিষ্ঠানো দায় হইয় ওঠে। পরণের কাপড় এমন ময়লা যে, ঘরের বাতাসে একটা অপ্রীতিকর গন্ধ। অপু সব সহ্য করিতে পারে, এক ঘরে এ ধরণের নোংরা স্বভাবের লোকের ভিড়ের মধ্যে শুইতে পারে না, জীবনে সে তা কখনো করে নাই।--ইহা তাহার অসহ ! কোথায় রাত্রে আসিয়া নির্জনে একটু পড়াশুনা করিবে-না ইহাদের বকৃবকের চোটে সে ঘর ছাড়িয়া বাহিরে আসিয়া দাড়াইল। নতুন লোকটি বড়বাজারের আলু-পোস্তায় আলুর চালান লইয়া আসে-হুগলী জেলার কোন জায়গা হইতে, অপু জানে, আরও একবার আসিয়াছিল। লোকটি বলিল, কোথায় যান ও মশায় ? আবার বেরোন না-কি ? অপু বলিল, এইখানটাতে দাড়িয়ে-বেজায় গরম আজ-- একটু পরে লোকটা বলিয়া উঠিল-হঁ্যা, হ্যা, হ্যা, বিছানাটা কি মহাশয়ের ? আস্থােন আসুন, সরিয়ে ন্যান একটু-এ-হুকোর জলটা গেল গড়িয়ে পড়ে-দুত্তোর-না- অপু বিছানা সরাইয়া পুনরায় বাহিরে আসিল । সে কি বলিবে ? এখানে তাহার কি জোর খাটে ? উহারাই উপরোধে পড়িয়া দয়া করিয়া থাকিতে দিয়াছে এখানে। মুখে কিছু না বলিলেও অপু অন্যদিন হয়তো মনে মনে বিরক্ত হইত, কিন্তু আজ সে সম্পূর্ণ অন্যমনস্ক ছিল। বাহিরের বারান্দায় জীর্ণ কাঠের রেলিং ধরিয়া অন্ধকারের দিকে চাহিয়া ভাবিতেছিল-সুরেশীদার কেমন চমৎকার বাড়ি কলকাতায়। ইলেক্‌ট্ৰক পাখি, আলো, ঘরগুলি কেমন