পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৭৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিনিমেষ দৃষ্টিতে বাহিরে তাকাইয়া থাকা ছাড়া উপায় নাই। বাহিরে জল জমিয়াছে। একটা চড়ুই পাখি হঠাৎ কোথা হইতে উড়িয়া আসিয়া রাস্তার ধারের জমা জলে স্নান করিতে লাগিল। মাথা ডুবাইয়া জল তুলিয়া গায় দেয়, কখনো সমস্ত শরীরটা ডুবাইয়া দেয় জলে। বৃষ্টি হওয়ায় মহাস্মৃতি—এদিকে ওদিকে অনেক পাখী ঝোপেকাডে কিচমিচ করিতেছে। ভয়ানক গরম পডিয়াছিল, তাহা হইতে মুক্তি পাইয়া সবাই খুশী। একটা শেয়াল সামনেব। বাগানটা পার হইতে গিয়া একেবারে রাণুপিসিদের উঠানে আসিয়া পড়িল । কাজল দিনের বেলা এত কাছ হইতে কখনো শেয়াল দেখে নাই, উৎসাহে? সে উঠিয়া দাড়াইল । শেয়াল বন্ড চালাক-দিনমানে মনুষ্যবসতির নিকটে ঘোবাফেরা করিতে বড় দেখা যায় না । কাজলের চোখ বিস্ময়ে কোিটল হইতে বাহির হইয়া আসিতেছিল। শেয়ালটা মিনিট খানেক স্থাণুবৎ দাডাইয়া হঠাৎ তীববেগে পাশের কচুবনে ঢুকিয়া পড়িল । বিকেলের দিকে কাজলের মনটা খারাপ লাগিতেছিল। বাবা বাড়ী নাই-এ সময়টা সে সাধারণতঃ বাবার সঙ্গে কাটায়। পরন্তু বেলার চাপা। আলো তাহাব মনে বেদনাব একটা সুর ছডাইয়া দিল। শুধুই কি বাবার জন্য মন খারাপ ? কাজল অবাক হইয়া আবিষ্কার করিল, মায়ের জন্যও তাহার। মন কেমন কৰিতেছে। কদিনই ব{ হইল, মা তাহদের দুইজনের সংসারে আসিয়াছে—তাহাব জন্য মন খারাপ হয় তবুও । জানাল দিয়া বাহিবে তাকাইয়া ভেজা গাছপালা দেখিতে দেখিতে কাজলের মনে হইল, মাকে সে সত্যই খুব ভালবাসিয়া ফেলিয়াছে। পুরী হৈমন্তীর ভাল লাগিতেছিল। জীবনের প্রথম সমুদ্র-দর্শনে তাহার মন । অকস্মাৎ আকাশের মত খোলামেলা হইয়া গেল । সারাদিন বেশ গরম থাকে। বিকালে দুইজনে সমুদ্রের ধারে যায়। পায়ে পায়ে হঁটিয়া হঠাৎ আবিষ্কার করে শহর অনেকটা পেছনে ফেলিয়া আসিয়াছে। বঁ-পাশে উচু বালির ডাঙ্গাএদিকে বিস্তৃত একখানি নীল আয়নার মত সমুদ্র ৷ প্রথম দিন রেল-স্টেশন হইতে আসিবার সময় পথের বঁাক ফিরিয়াই হঠাৎ সামনে সমুদ্র দেখিয়া হৈমন্তী অবাক হইয়া গিয়াছিল। সমুদ্র সম্বন্ধে মনে তাহার যে ধারণাটা ছিল, সেটাকে চুরমার করিয়া আসল সমূদ্র চোখের সামনে একটা অগাধ বিস্তৃতি খুলিয়া দিল । সেদিন বেড়াইতে বেড়াইতে অনেকদূর গিয়াছিল। অপু বলিল-কেমন, जांछ ?