পাতা:অপু-পথের পাঁচালী-অপরাজিত.pdf/৭৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রেহ করেন, কিন্তু বেশীর ভাগই বিরূপ। পরীক্ষার খাতায় বা হােম-টাঙ্কের খাতায় কাজলের-লেখা উত্তর তাহাদের নিকট অকালপক্কতা বলিয়া মনে হয়। ছুটির দিনে দুপুরে সবাই ঘুমাইয়া পড়িলে বাবার বই যে আলমারিতে রাখা আছে, সেটা খুলিয়া বই নামাইয়া সে পড়ে। অনেক বইএর বিষয়বস্তু বুঝিতে পারে না, কিন্তু সব বই সে নাড়িয়া চাডিয়া দেখে। শুধুমাত্র বই নাড়াচাড়া করিয়া নীটসে, সোপেনহাওয়ার, ইমানুয়েল কাণ্ট, স্পিনোজা প্রভৃতির নাম মুখস্থ হইয়া গিয়াছে। দুপুরবেলা কোথাও কোনো শব্দ নাই, রাস্তায় গাড়ীঘোডার চলাচল কম, বাড়ীটা যেন বিমাইতেছে। সময়টা পড়াশুনা করিবার অত্যন্ত উপযুক্ত। বই খুলিয়া কোলের উপর রাখিয়া পড়িতে পডিতে মাঝে মাঝে সে মুখ তুলিয়া চাহিয়া দেখে। দুপুরবেলার নির্জনতার সহিত তাহার মনটা একাত্ম হইয়া আসে। বিভিন্ন বিষয়ের বই একটা অদ্ভুত জগৎকে হাতের কাছে আনিয়া দেয়-নীহারিকার জগৎ, প্রাণীজগৎ, বিভিন্ন দেশের বিচিত্র উদ্ভিদের জগৎ । ছোটবেলায় বাবা মুখেমুখে তাহাকে বিবর্তনবাদ বোঝাইত, এখন সে আলমারী হইতে বাবার নাম সই-করা “অরিজিন অব দি স্পিসিজ'- বইটা নামাইয়া পড়িবার চেষ্টা করে। দাত ফুটাইতে পারে না, কিন্তু বইখানা খুব আকর্ষণ করে। চারিদিকে যেন শীতকালের শেষ বেলার রৌদ্রের মত একটা সুদূরের হাতছানি-অজানার আহবান। সেদিন আকাশ দেখিয়া মনে হইতেছিল বৃষ্টি নামিবে। কিন্তু কাজলের মনটা সকাল হইতেই কি কারণে বেশ প্রসন্ন ছিল। বৃষ্টির আশঙ্কা উপেক্ষা করিয়া সে বিকালে বেড়াইতে বাহির হইল। চারিদিকে যেন সন্ধ্যার ছায়া। মেঘ খুব নিচে নামিয়াছে। যে কোন সময়ে বৃষ্টি আসিতে পারে। আকাশে একটাও পাখী নাই, রাস্তায় লোক কম। গাছের ঘন সবুজ পাতা নীল মেঘের পটভূমিতে ভারী সুন্দর দেখাইতেছে। গুমগুম একবার মেঘ ডাকিয়া উঠিল। রাস্তার ধারে ঘন ঘাসের মধ্যে অজস্র ঘাসফুল ফুটিয়া আছে। কাজলের ইচ্ছা হইল, ঘাসে একবার হাত লগাইয়া দেখে। রান্ত ছাড়িয়া নিচু হইয়া সে ঘাসের উপর হাত দিল। সুন্দর কার্পেটের মত পুরু হইয়া ঘাস জন্সিয়াছে। নরম, সবুজ, সজীব । অসংখ্য ঘাসফুল কালো আকাশে নক্ষত্রের মত ছড়াইয়া ফুটিয়াছে। কাজল লক্ষ্য করিয়া দেখিল, প্রত্যেকটি ফুলের তিন পাশে তিনটি BD DBB g DD BDYSS SBDLL DDBDD DDD LD S DDD করিয়া সাদা ফুল, পাশ দিয়া তিনটি করিয়া ঘাসের শীষ।