ফুলের স্ববাস, সোনার রেণু, পদ্মের মধু, রোদ-বাতাস সব যেন একসঙ্গে এসে উপস্থিত হল। মধুকরের দল চারি দিকে স্বরের মধুবিষ্টি করে দিলে। বাহবা বাহবা পড়ে গেল। চিনি-দিদি কিন্তু গানও বুঝছেন না, মুরও শুনছেন না। তিনি কেবল কারা কারা র্তার পার্টিতে এসেছে তারি হিসেব সবাইকে দিচ্ছেন, ‘বোঝা থেকে শাকের আটটি পর্যন্ত কেউ আর আসতে বাকি নেই, দেখেছ ভাই ? একটা শু্যামা পাখি পেয়ারা গাছে বসে শিস দিলে, অমনি চিনি-দিদি বললেন, “ওই শ্বামদাসী এলেন। ওই বুঝি কাছিমুন্দি ? না না কাছিম বুড়ে তো নয়। এ তবে কে। সবাইকে তো চিনি নে ভাই, তেনার সব পুরোনো বন্ধু। একটা ভীমরুল বেঁ-বো করে চারি দিকে ঘুরে বেড়াতে লাগল, চিনি-দিদি তার পিছনে ‘ভালো আছ ? ভালে আছ ? বলতে বলতে ছুটলেন । চড়াই সোনালিকে বললে, ‘চিনি-দিদি একেবারে খেপে গেছেন।’ সোনালি মজা দেখবার জন্তে আড়াল থেকে বেরিয়ে দাড়ালেন। চিনি-দিদি ভীমরুলের সঙ্গে খানিক ছুটে একটা গাছের তলায় দাড়িয়ে একটু কপি পাতা খাচ্ছেন এমন সময় হাওয়াতে টুপ টাপ ক’রে পাতার শিশিরের সঙ্গে একটি শিউলি ফুল ঝরে পড়ল । চিনি-দিদি অমনি বলে উঠলেন, “অ শিউলি, অ শিশির, এতক্ষণে বুঝি আসতে হয় ? এই সময় একটু হাওয়া উঠল আর টুপ করে একটি কুল চিনি-দিদির ঠিক নাকের উপরে পড়ে গেল, চিনি-দিদি চমকে উঠে বললেন, ‘এই যে বাতাসি-দিদিও এসেছ । তবু ভালো যে মনে পড়েছে।’ বলে কতকগুলো গিনিপিগ নিয়ে চিনি-দিদি খাওয়াতে চললেন । ‘কে যে চিনি-দিদির চেনা নয়, তা জানি নে ? বলে চড়াই এদিক ওদিক ভালো করে দেখে পা টিপে টিপে বেড়াল যেখানে আতা গাছের ডালে গুড়ি মেরে বসে ঐদিক ওদিক দেখছিল, সেইখানে গিয়ে বললে, সব ঠিক তো বন্দোবস্ত ? বেড়াল একবার ওই ওদিকটায় ঘাড় তুলে দেখে বললে, ‘সব ঠিক। আসছে তারাশ’ এদিকে চিনি-দিদি সোনালিকে নতুন W36:
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড.djvu/৭৩
অবয়ব