পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারপরে রানা কুম্ভ চিতোরের সিংহাসনে বসেছেন। র্তার রানী মীরা দেখতে যেমন, গান গাইতেও তেমন । রতিয়া-রানার মেয়ে মীরা । তার গান শুনে রূপ দেখে রানা কুম্ভ তাকে বিয়ে করেন । রানী স্বামীর সেবা করেন কিন্তু মন র্তার পড়ে থাকে— রণ ছোড়জীর মন্দিরে বঁাশি হাতে কালো পাথরের দেবমূর্তির পায়ের কাছে । রানার কিন্তু এ ভালো লাগে না । তিনি নিজে কবি, গান রচনা করেন, আর সেই গান মীর গায় রাজমন্দিরে বসে– এই চান রানা । কিন্তু সে তো হল না ! মীরা দেবতার দাসী, তিনি রণ ছোড়জীর মন্দিরেই সারা দিনমান ভক্তদের মধ্যে গাইতে লাগলেন, "মীরা কহে বিনা প্রেমসে না মিলে নন্দলালা ? চিতোরেশ্বরী মীরা সবার মাঝে গান গাইবে একতারা বাজিয়ে, এটা ভারী লজ্জার কথা হয়ে উঠল। রান হুকুম দিলেন, ‘মন্দিরে বাইরের লোক আসা বন্ধ করে৷ ” এক রাতের মধ্যে মন্দিরটা কানাতে ঘেরা হয়ে গেল। মীরাকে আর কেউ দেখতে পায় ন| কিন্তু গানের সুর শুনতে কানাতের বাইরে দেশ-বিদেশের লোক জড়ো হয়। বাশি শুনে হরিণ যেমন, তেমনি সবাই এক-মনে কান-পেতে প্রাণ ভরে মীরার গান শুনতে থাকে— তাড়ালে যায় না, হুকুম শোনে না, কাউকে মানেও না। জোছনা-রাতে মন্দিরের সামনে শ্বেত-পাথরের বেদীতে বসে সোনা আর হীরে-জড়ানো সাজে সেজে মীরা স্বর্গের অঙ্গরীর মতো দেবতার সামনে একল নাচছেন, গাইছেন, রানা বীণা বাজাচ্ছেন, বাইরে লোকের ভিড়, এমন সময় আকাশ থেকে তারার মালার মতো একগাছি হীরের হার মীরার গলায় এসে পড়ল। রানা চমকে উঠে বীণা বন্ধ করলেন। মীরা সেই অমূল্য হার নিজের গলা থেকে খুলে মুন্দিরের মধ্যে বংশীধারী রণ ছোড়জীর গলায় পরিয়ে দিয়ে সে-রাতের মতো গান বন্ধ করলেন। হার যে কে দিয়ে গেল, তার আর খোজ হল না, কিন্তু দেশে নানা কথা রটল। పెa