পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খোকাথুকি আদরপুরের রাজার ঘরে মানুষ হয় খোকা ; আর খুকি— সে মানুষ হয় অনাদরপুরে কাঙালের ঘরে! সে কাদের খোক, কাদেরই বা খুকি তা তো জানতে পারছি নে, শুধু দেখতে পাচ্ছি —খোকা আছেন রাজার হালে, সোনার পালঙ্কে ঘুমিয়ে ছধিভাতি খেয়ে ; আর খুকি— সে রয়েছে উপবাসে ছেড়া কাথায়, ভিজে মাটির উপর । ঠাকুর পাঠিয়েছিলেন খোকাথুকি দুজনকেই এই পৃথিবীতে দুটি রূপের ফুল হয়ে ফুটে উঠতে আপন আপনি ; কিন্তু রাজাট ভাবলে, আদর না পেলে যত্ন না পেলে ছেলের বঁাচা মুশকিল— ফুলকে নিয়ে সে সোনার কোঁটোতে ভরে রাখলে। আর কাঙাল— সে গোড়া থেকেই ভেবে নিলে ফুল তো শুখোবেই, কাজেই মেয়ের মরা-বঁাচার ভাবনা-ই সে ছেড়ে বসল একেবারে গোড়া থেকে। গামলার গাছে গোলাপফুল যেমন বাড়ে তেমনি বাড়তে থাকল রাজপুত্ত্বর আর পাঁকে পড়ে পদ্ম যেমন বাড়ে, তেমনি বাড়তে থাকল দিনে দিনে কাঙালিনী কস্তা। একেও দেখে লোকে বলে আহা, ওকেও দেখে লোকে করে আহা, কিন্তু রাজার ছেলে যখন আবদার করে তখন তার মন জোগাতে লোকে পথ পায় না— গীঠের কড়ি খরচ করে অকাতরে, যার গাঠ কাটা গেছে সে-ও ধার ক’রে রাজপুত্ত্বরকে খুশি করতে চলে। আর কাঙালিনী সে মুষ্টি ভিক্ষে চেয়ে ছয়োরে দুয়োরে ঘোরে— কোনোদিন পায় হুমুঠো ক্ষুদ, কোনোদিন পায়ও না! যেদিন বা পায়, সেদিন চোখের জলের মুন দিয়ে সে ভিক্ষের চাল একটু একটু করে ভিজিয়ে খায়। মড়ক আসে— সে আদরপুরেও আসে, অনাদরপুরেও আসে । আঁচিল পাচিল ঘেরা সাতমহলের মাঝ থেকে এক রাতে রাজপুত্রের সাত বোনকে নিয়ে চলে যায় সব বাধা ঠেলে ! কাণ্ডালের ঘরে 3\ebr