পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভগবতী, আমার যে ছেলে হবে, সে যেন মহারাজেরই মতে তেজস্বী হয়, তারই মতো যেন নিজের রানীকে খুব ভালোবাসে। হায় মানুষের সকল ইচ্ছ। পুর্ণ হয় না ! পুষ্পবতী রাজারই মতে তেজস্বী ছেলে পেয়েছিলেন বটে, কিন্তু তার মনে যে বড়ে সাধ ছিল— সেই শ্বেতপাথরের বারাণ্ডায় বসে মহারাজের মুখে যুদ্ধের গল্প শুনবেন— তার যে বড়ো সাধ ছিল নিজের হাতে মহারাজের মাথায় হাওয়ার মতে পাতল সেই সুন্দব চাদরখানি জড়িয়ে দেবেন— সে সাধ কোথায় পুর্ণ হল ? তার সে মনের ইচ্ছ। মনেই রইল, এ জন্মে আর মহারাজের সঙ্গে দেখা হল মা । যে-দিন বল্লভপুবে শিলাদিত্য যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দিলেন সেই দিন চন্দ্রাবতীব রাজপ্রাসাদে রানী পুষ্পব তী মায়ের কাছে বসে সেই রুপোব চাদরে ছাঁচেব কাজ করছিলেন । কাজ প্রায় শেষ হয়েছিল, কেবল সূর্যমূর্তির নিচে সেনার অক্ষরে শিলাদিত্যের নামটি লিখতে বাকি ছিল মাত্র । পুষ্পবর্তী যত্ন করে নিজের কালে চলের চেয়ে মিহি, আগুনের চেয়ে উজ্জন, একগাছি সোনাব তার, সরু হতেও সরু একটি সোনার ছুচে পরিয়ে একটি ফোড় দিয়েছেন মাত্র, তার চাপার কলির মতো পুষ্পবতীব কচি অঙিলে সেই সোনার ছাঁচ বোলতার হুলের মতে বিধে গেল। যন্ত্রণায় পুপবতীর চোখে জল এল ; তিনি চেয়ে দেখলেন একটি ফেট রক্ত rে fাংস্নার মতো পরিষ্কার সেই রুপোর চাদরে রাঙা এক টুকরে। মণির মতো ঝকঝক করছে। পুষ্পবতী তাড়াতাড়ি নির্মল জলে সেই রক্তের দাগ ধুয়ে ফেলতে চেষ্টা করলেন ; জলের ছিটে পেয়ে সেই একবিন্দু রক্ত ক্রমশ-ক্রমশ বড় হয়ে, একটুখানি ফুলেল গন্ধ যেমন সমস্ত হাওয়াকে গন্ধমস কলে, তেমনি পাতল ফুরফুবে চাদরখানি রক্তময় করে ফেলল । সেই রক্তের দিকে চেয়ে পুষ্পব মীর প্রাণ কেঁপে উঠল ; তিনি ছলছল চোখে মায়ের দিকে চেয়ে বললেন—ম, আমাকে বিদায় ۵۹ این