ওখানে বুঝে একটু-আধটু রঙ দেওয়া, চোখের লাইন টান, একটু ফোট দিয়ে গয়না বোঝানো, এ বড়ো কঠিন। সত্যি বলব, আমি তো পুতুল নিয়ে এত নাড়াচাড় করলুম, এখনো সেই জিনিসটি ধরতে পারি নি। একটু টাচ দিয়ে দেয় এখানে ওখানে, বড়ো শক্ত তা ধরা ! সেবার পরগনায় যাচ্ছি বোটে, সঙ্গে মনীষী আছে। কোথায় রইল সে এখন এক-এক পড়ে, কী শিখল ন-শিখল—একবার লড়তে এলে তো বুঝব। তা, সেবারে খাল বেয়ে যেতে যেতে দেখি, এক নৌকোবোঝাই পুতুল নিয়ে চলেছে এক কারিগর। বললুম, 'থামা, থামা বোট, ডাক্ ওই পুতুলের নৌকো। মাঝিরা বোট থামিয়ে ডাকলে নৌকোর মাঝিকে, নৌকো এসে লাগল আমার বোটের পাশে । নানা রঙবেরঙের খেলনা, তার মাঝে দেখি, কতকগুলি নীল রঙের মাটির বেড়াল । বড়ো ভালো লাগল । নীল রঙটা ছাই রঙের জায়গায় ব্যবহার করেছে তারা ; ছাই রঙ পায় নি, নীলেই কাজ সেরেছে। অনেকগুলো সেই নীল বেড়াল কিনে ছেলেমেয়েদের বিতরণ করলুম। পুতুলের গায়ের টাচ বড়ে চমৎকার । পটও তাই ; এইজন্যই আমার পট ভালো লাগে, বড়ো পাকা হাতের লাইন সব তাতে । হ্যা, মনীষীর লড়াইয়ের কথা বলছিলুম । সেই লড়াইয়ের এক সুন্দর গল্প মনে এল । অনেক কাল আগের কথা। একজন লোক, তার পূর্বপুরুষ ভালে৷ মৃদঙ্গ-বাজিয়ে, নিজেও বাজায় ভালো । সে বলেছিল, মৃদঙ্গ বাজিয়ে আমার মুখ হল না। গণেশ আসত, তার সঙ্গে একহাত পাল্লা দিয়ে বাজাতে পারতুম তবে স্বখ হত। গণেশের কাছে হার হলেও তার স্থখ, সে শুধু সমানে সমানে পাল্লা দিতে চেয়েছিল । কিছুকাল বাদে তার নাতি এল। বলে, ‘খেতে পাচ্ছি নে ? বললুম, কেন, এতবড়ো বাজিয়ের নাতি তুমি, খেতে পাচ্ছ না, সে কী কথা । আচ্ছ, কত হলে তুমি থাকবে আমার কাছে ? অল্পস্বল্পই চাইলে । রাখলুম তাকে আমার বাড়িতেই । তখন আমার ভয়ানক বাজনার শখ, এসরাজ বাজাই । শু্যামসুন্দরও আছে । ছেলেটি বললে, “আমায় কী করতে হবে ? বললুম, কিছুই না। সন্ধেবেলা তুমি মৃদঙ্গ বাজাবে, আমি শুনব ।’ প্রথম দিন সন্ধেবেল বারান্দায় যেমন বসি এইরকম দেয়ালের কাছে চৌকি টেনে বসেছি, সে মৃদঙ্গ বাজাবে। বললে, ‘গান চাই। শু্যামন্বন্দরকে বললুম, সে আস্তে আস্তে গান ধরলে, আর ছেলেটি বাজালে। কী বাজাল, যেন মেঘের २8१