এ-আমল সে-আমল ঠিক কত ব য় সে তা মনে নেই কিন্তু এবারে একটা চাকর পেলেম আমি । চাকরের আসল নামটা শ্রীরামলীল কুণ্ড, নিবাস বর্ধমান বীরভূই। সে কিন্তু বলত তার নাম— ছাঁ আম্নাল কুণ্ডু । ছেলেবেলা থেকে রামলাল ছিল আমাদের ছোটোকর্তার কাছে। ঘুমের আগে খানিক পায়ে স্থড়ম্বড়ি না দিলে ছোটেকর্তার ঘুমই আসত না। সেই মস্ত ভার পেয়েছিল রামলাল। কিন্তু কাজে টিকতে পারলে না। সকাল থেকে সন্ধ্যা একেবারে মুনিয়মে বাধাচালে চলত ছোটোকর্তার কাজকর্ম সমস্তই । নিয়মের একচুল এদিক ওদিক হলে ছোটোকর্তার মেজাজ খারাপ, বুক ধড়ফড়, অনিদ্রা— এমনি নানা উৎপাত আরম্ভ হত। চাকরদের এই-সব বুবে চলতে হত, না হলেই তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত ! এই-সব নিয়মের গোট কতক বলি, তু হলে হয়তো বোঝা যাবে কেন রামলাল ছোটোকর্তার পদসেবা ছেড়ে ছোটোবাবুআমার কাছে— পালিয়ে এল। শুনেছি সেকালের বড়ে বড়ো পাথরের গোল টেবিলের বাক পায়াগুলো সইতে পারতেন না ছোটোকর্ত। এক চাকরকে প্রত্যহ তোয়ালিয়া দিয়ে টেবিলের পায় তিনটিকে ঘোমটা পরিয়ে রাখতে হত, এবং সর্বদ নজর রাখতে হত তোয়ালিয়া বাতাসে সরে পড়ল কিনা । হু কোবরদার, তার কাজই ছিল যে প্রথম টানেই সর্টকা থেকে ধোয়৷ পান যেন কর্তা – একবারের বেশী দু'বার না টান দিতে হয়। দেওয়ালে বাকা ছবি থাকলে মুশকিল। ছেলেবেল থেকে ছোটোকর্তার পা না টিপলে ঘুমই আসত ন', সেজন্যে ছিল বিশেষ চাকর, যার হাত পরীক্ষা করে ভর্তি করা হত কাজে— কড় হাত না হয়। ঘুমের আগে গল্পশোনা, সকালে খবর শোনানো— এমনি নানা কাজে নান লোক ছিল । সব চেয়ে শক্ত কাজ তার— যাকে বারোমাসই ছোটেকর্তার আচমনের জল দিতে হত। কর্তার অভ্যাস ছেলেবেলা থেকেই এক আঁজলা জল চfকরের গায়ে ছিটোতে হবে ! তোপ পড়ার সঙ্গে ছোটোকর্তী একবার ইচিবেনই, যেদিন হাচি এল না সেদিন ডাক্তারের ডাক পড়ল । ছোটোকর্তার এই সব অকাট্য নিয়মের কোনটা ভঙ্গ করে যে রামলাল ՀԵ
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭
অবয়ব