এতে আপত্তির মানে কী। দেশের লোক যদি চায় কিছু করতে তোমার তো তাতে হাত নেই। অবনীন্দ্রনাথ আর কী করেন, ছোটো ছেলে বকুনি খেলে তার যেমন মুখখানি হয়, অবনীন্দ্রনাথের তেমনি মুখের ভাবখানা হয়ে গেল। বললেন, ‘তা আদেশ যখন করেছ, মালাচন্দন পরব, ফোটানাটা কাটব, তবে কোথাও যেতে পারব না কিন্তু।” এই বলেই তিনি গুরুদেবকে প্রণাম করে পড়ি কি মরি সেই ঘর থেকে পালালেন । গুরুদেব হেসে উঠলেন ; বললেন, ‘পাগলা বেগতিক দেখে পালালে |’ আশি বছরের খুড়ো সত্তর বছরের ভাইপোকে যে ‘পাগলা’ বলে হেসে উঠলেন, এ জিনিস বর্ণনা করে বোঝারে কে। এই গল্পগুলো গুরুদেবের কাছে এত মান পাবে তা অবনীন্দ্রনাথও ভাবেন নি কখনো । গুরুদেবের ইচ্ছাকুযায়ী বই ছাপ শেষ হয়ে এল, কিন্তু কয়টা দিনের জন্য তার হাতে তুলে দিতে পারলুম না। আজ এ বই হাতে নিয়ে তাকে বার বার প্রণাম করছি, আর প্রণাম করছি অবনীন্দ্রনাথকে, যিনি গল্পচ্ছলে আমার ভিতর এই রসের ধার বইয়ে দিলেন। ‘শিল্পীগুরু অবনীন্দ্রনাথ’ গ্রন্থে (বিশ্বভারতী, বৈশাখ ১৩৭৯ ) এই প্রসঙ্গে শ্রীমতী রানী চন্দ আরো লেখেন : একটানা বেশিক্ষণ পড়তে কষ্ট হয় গুরুদেবের। রোজ কিছুটা করে পড়েন। পড়ার পরে লেখাগুলো তুলে রাখি, পরদিন আবার তাকে দিই। যেদিন সবটা পড়া হয়ে গেল— উঠে এগিয়ে এলাম, কাগজগুলো সরিয়ে নেব—গুরুদেব কোলের উপর রাখা লেখাগুলোর উপর বা হাতখানি চাপ দিয়ে রইলেন। আমি চুপ করে দাড়িয়ে রইলাম। বললেন, রথীকে ডাকো । রখীদাকে ডেকে আনলাম। রখীদা গুরুদেবের কোঁচের পিছনে এসে দাড়ালেন গুরুদেব বুঝতে পারলেন। সেইভাবে বসেই লেখার কাগজগুলো হাতে নিয়ে ঘাড়ের পাশ দিয়ে পিছন দিকে তুলে ধরলেন । বললেন, গ্রেসে দাও । 8 ఫి