এসরাজ বাজাতে একেবারে পাকা হয়ে গেলুম। চমৎকার টিপ দিতে পারি এখন । শখ আমাকে এই পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেল। আমরা যখন ছোটে ছিলুম মহর্ষিদেব আমাদের কাছে গল্প করেছেন— একবার তারও গান শেখবার শখ হয়েছিল । বিডন স্ট্রীটে একটা বাড়ি ভাড়া করে ওস্তাদ রেখে কালোয়াতী গান শিখতেন, গলা সাধতেন। কিন্তু তার গলা তো আমরা শুনেছি— সে আর-এক রকমের ছিল, যেন মন্ত্র আওড়াবার গলা, গানের গলা র্তার ছিল বলে বোধ হয় না । যে কথা বলছিলুম। দেখি সেই মামুলি গৎ, সেই মামুলি স্বর বাজাতে হবে বারে বারে । একটু এদিক-ওদিক যাবার জো নেই— গেলেই তো মুশকিল। কারণ, ওই-যে বললুম, ভিতরের থেকে শখ আসা চাই । আমার তা ছিল না, নতুন স্বর বাজাতে পারতুম না, তৈরি করবার ক্ষমতা ছিল না। অথচ বারে বারে ধরাবাধা একই জিনিসে মন ভরে না । সেই র্যাকটা নেই যা দিয়ে গন্ধুে যেতে পারি, কিছু স্বষ্টি করে আনন্দ পেতে পারি হবে কী করে— আমার ভিতরে নেই, তাই ভিতর থেকে এল না সে জিনিস । ভাবলুম কী হবে ওস্তাদ হয়ে, কালোয়াতী স্বর বাজিয়ে । আমার চেয়ে আরো বড়ো ওস্তাদ আছেন সব— যারা আমার চেয়ে ভালো কালোয়াতী স্বর বাজাতে পারেন। কিন্তু ছবির বেল। মামার তা হয় নি। বড়ে ওস্তাদ হয়ে গেছি এ কথা ভাবি নি— আমিও তাদের সঙ্গে পাল্লা দেব, ছবির বেলাস য়েছিল আমার এই শখ । ছবির বেলায় এই শখ নিয়ে আমি পিছিয়ে বাই নি কখনো । বড়োজ্যাঠামশায় একবার আমার ছবি দেখে বললেন, ‘হ্যা, হচ্ছে ভালো, বেশ, তবে গোটাকতক মাস্টারপিস প্রডিউস করে । তা নইলে কী হল । এই-সব লোকের কাছ থেকে আমি এইরকম সার্টিফিকেট পেয়েছি। এখন বুৰি ‘মাস্টার’ হতে হলে কতটা সাধনার দরকার। এখনো সেরকম মাস্টারপিস প্রডিউস করবার মতো উপযুক্ত হয়েছি কিনা আমি নিজেই জানি নে । বাজনাটা একেবারে ছেড়ে দিলুম না অবিস্তি— কিন্তু উৎসাহও আর তেমন রইল না। বাড়িতে অনেকদিন অবধি সংগীতচর্চা করেছি। রাধিক গোসাই নিয়মমতে আসত। শু্যামস্বন্দরও এসে যোগ দিলে। শু্যামন্বন্দর ছিল কর্তাদের আমলের। মা বললেন, আবার ও কেন, তোমাদের মদ-টা খাওয়ানো শেখাবে। ওকে তোমরা বাদ দাও। আমি বললুম, ন মা, ও থাকৃ, tళి
পাতা:অবনীন্দ্র রচনাবলী প্রথম খণ্ড.djvu/৭৬
অবয়ব