পাতা:অমর প্রেম - মানিক ভট্টাচার্য.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ . 'অমর প্রেম মনােহর কিছুক্ষণ ধরিয়া লিখিয়া গেলেন। একবার লেখা বন্ধ করিয়া লক্ষ্য করিলেন—সুহাসিনী এখনও কক্ষে আসিল না, আবার খানিকটা লিখিয়া গেলেন, তথাপি সুহাসিনীর দেখা নাই। অন্য রাত্রে তাহার আহার সারিয়া আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সুহাসিনী কার্য্য সারিয়া আসিত। কিন্তু আজ এত বিলম্বের কারণ কি? মনােহর লেখা বন্ধ করিয়া উঠিলেন। রন্ধনগৃহের সম্মুখে গিয়া দেখিলেন—উচ্ছিষ্ট থালা বাসন সব ধুইয়া ঘরের এক পাশে সজ্জিত রহিয়াছে। একটু দূরে একখানি ছােট থালায় অনুমান এক ছটাক চালের ভাত, তাহারি উপর একধারে ডালের সামান্য একটু চিহ্ন ও তাহারি কাছে ঈষৎ একটু তরকারি বােধ হয় সুহাসিনীর আহারের অন্য অপেক্ষা করিতেছে। মনােহর সত্য সত্যই শিহরিয়া উঠিলেন। দিনরাত্রি প্রাণান্ত পরিশ্রমে সকলের আহার যােগাইয়া সুহাসিনীকে এই খাইয়া থাকিতে হয়। তখন রাত্রি ১২টা বাজিয়া গিয়াছে, তথাপি এখনও কাজের শেষ হয় নাই। তখনও উনানে তাওয়া চাপানো! | ক্ষিপ্রহন্তে কয়েকখানি রুটি বেলিয়া লইয়া সুহাসিনী তাড়াতাড়ি সেগুলি সেকিয়া লইল। তারপর পাত্রাদি সব যথাস্থানে তুলিয়া রাখিয়া যখন খাইতে বসিল তখন তাহার দু’চক্ষে জলধারা। অঞ্চল দিয়া অশ্রুধারা মুছিয়া সুহাসিনী সেই স্বল্প আয়ের দুই মুঠি গলাধঃকরণ করিয়া জলের গেলাস মুখে তুলিল। | মনােহর নিঃশব্দে কক্ষে ফিরিয়া আসিয়া শয্যার উপর বসিলেন। খুরিয়া ফিরিয়া এই কেবল তাহার মনে হইতে লাগিল, এত দুঃখে তিনি সুহাসিনীকে রাখিয়াছেন। তথাপি তিনি বালকের মত অভিমান