পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০

অধ্যায়: পাঁচ

সমব্যথী চিহ্নের মহাপুরুষ

বিভিন্ন শতাব্দীতে এমন অনেক ‘stigmatist' বা সমব্যথী ক্ষতচিহ্নধারী’র কথা জানা গেছে। তাদের অনেকেই ধর্মীয় সমাজে অলৌকিক মহিমায় মণ্ডিত হয়েছেন।

 কোনেরত-এর থেরেসা নিউম্যান (Theresa Neuman of Konnersreuth) তার Stigmatisation বা সমব্যথী ক্ষতচিহ্নের জন্য বিশ্বজুড়ে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছিলেন। থেরেসা নিউম্যান জন্মেছিলেন ১৮৯৮-এর গুড ফ্রাইডের দিন, মৃত্যু ১৯৬২ সালে। ১৯২৬-এর ২ এপ্রিল থেরেসার হাত-পা থেকে প্রথম রক্ত ঝরতে নাকি দেখা যায়। তারপর প্রতি বছরই গুড ফ্রাইডেতেই থেরেসার হাত-পা থেকে ঝরতে লাগল রক্ত। যিশুর সঙ্গে একাত্মতার ফলেই যে এই রক্তপাত এই বিষয়ে ভক্তজনের কোন দ্বিমত ছিল না। থেরেসা এই সমব্যথী-চিহ্ন ‘আত্ম-সম্মােহন ও ‘স্ব-ধারণা সঞ্চার’ (auto-suggestion)-এর সাহায্যে সৃষ্টি করতেন না। তিনি এর জন্য চতুরতার আশ্রয় নিতেন। তাঁর এই জালিয়াতি শেষপর্যন্ত ধরা পড়ে।

 ইতালিয়ান অন্ধ-ধর্মবিশ্বাসী গােম্ম। গ্যালভানির হাতে-পায়েও এমনি পবিত্র সমব্যথী-চিহ্ন ফুটে উঠত। তাই নিয়ে ইউরােপে প্রচুর উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। গােম্মা গ্যালভানি জন্মেছিলেন ১৮৭৮ সালে, মৃত্যু ১৯০৩ সালে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে অভিমত প্রকাশ করেন যে, গােম্মা আত্ম-সম্মােহন (autosuggestion) ও হিস্টিরিয়াগ্রস্ত (hustrrico epileptic fits) অবস্থায় নিজেই নিজের শরীরে নিজেই ক্ষতের সৃষ্টি করতেন।

 সমব্যথী চিহ্নের জন্য শ্রীরামকৃষ্ণদেবের নাম উল্লেখ করা দরকার। শােনা যায়, একবার রামকৃষ্ণদেবের নিষেধ সত্ত্বেও একজন আর একজনকে মেরেছিল। সেই মারে রামকৃষ্ণদেব এতই সমব্যথী হয়েছিলেন যে, তাঁর পিঠেও আঘাত-চিহ্ন ফুটে ওঠে।  বস্তুবাদী মনস্তত্ত্ববিদ মাত্রেই আমার সুরে সুর মিলিয়ে বলবেন, যদি ঘটনাটা ঘটেও থাকে, তবু এর মধ্যে অলৌকিক কিছু নেই। রামকৃষ্ণদেব গভীর সংবেদনশীলতার (auto-ensetiveness) জন্যেই আত্ম-সম্মােহনের দ্বারা ও স্ব-ধারণা