বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮০
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
১৮০

অধ্যায়: নয়

পীঠস্থান ও স্থান মাহাত্ম্য রহস্য

আদ্যা’মা রহস্য

 দক্ষিণেশ্বরের কাছে আদ্যাপীঠের মন্দির ভারতীয় এবং হিন্দুদের কাছে এক পবিত্র মন্দির। বহু বাড়িতেই আদ্যামারূপী কালীমুর্তির ছবি যথেষ্ট ভক্তি ও বিশ্বাসের সঙ্গে পূজিত হয়। কথিত আছে, আদ্যামায়ের স্তব পাঠ করলে অনেক মুশকিলের অবসান হয়। আদ্যাস্তবেই বলা হয়েছে, তিন পক্ষকাল আদ্যাস্তব শ্রবণ করলে অপুত্রার পুত্র হয়। দু’মাস শুনলে রন্ধন মুক্তি ঘটে (জেল থেকে খালাস পেতে অপরাধীরা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন)। মৃতবৎসা দুমাস স্তব শ্রবণে জীববৎসা হয়। ঘরে লিখিত স্তব রেখে দিলে অগ্নি এবং চোরের দ্বারা কোন ক্ষতি হবে না (সরকারি উদ্যোগে কয়েক কোটি স্তব ছাপিয়ে প্রতিটি পরিবারপিছু একটা করে বিলি করলে আর অহেতুক ফায়ার ব্রিগ্রেড পুষতে হয় না, পুলিশের ওপরেও চাপ কমে। অন্ততঃ ব্যাঙ্কগুলো চোর-ডাকাতের হাত থেকে বাঁচতে আদ্যাস্তবের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন)।

 আদ্যামায়ের এই কালীমূর্তি মাটি ফুঁড়ে উঠেছিলেন কলকাতার ইডেন গার্ডেনে। সালটা সম্ভবত ১৯২৮। শ্রীঅন্নদা ঠাকুর নাকি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন যে, আদ্যাকালী গঙ্গার তীরে ইডেন গার্ডেনে হাজার হাজার বছর ধরে মাটির তলায় বন্দিনী হয়ে রয়েছেন। এবার মা তাঁর বন্দীদশা কাটিয়ে মেদিনী ভেদ করে উঠবেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে শ্রীঅন্নদা ঠাকুর ইডেনে গেলেন, সেখানেই পেলেন মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা আদ্যাকালীকে। সেই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হলো দক্ষিণেশ্বরের কাছে আদ্যাপীঠের মন্দিরে। এরই মধ্যে কিছু লোক সন্দেহ প্রকাশ করলেন যে, মুর্তিটি আদৌ হাজার হাজার বছর ধরে ইডেনে ছিল না। দু-এক দিন আগে মাটিতে পোঁতা হয়েছিল। মূর্তির তলায় ঢালা হয়েছিল বস্তাখানেক শুকনো ছোলা। ছোলাতে জল ঢেলে মাটি বুজিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুকনো ছোলা জল পেয়ে ফুলতে শুরু করে। প্রচুর ছোলা ফুলছে, আয়তন বাড়ছে, অতএব আশেপাশে চাপও বাড়ছে, গর্তের চারপাশে চাপ বাড়লেও শক্ত মাটিতে কিছুই করারও উপায় নেই। স্বাভাবিক কারণেই ছোলার ওপর চাপানো মূর্তিটিকে ঠেলে ছোলাগুলো নিজেদের জায়গা