পড়া। এই জমিটা ইউনিস বিশ্বাসদের। তারাও মন্দির কমিটিতে ঢুকতে চায়, টাকার গন্ধে।
—মন্দির কমিটিতে কারা আছেন?
—আশে-পাশের অঞ্চলের রাজনীতিকরা লোকগুলোই মন্দির কমিটির নেতা হয়ে বসেছেন। আমাকে ভাঙিয়ে খাচ্ছে, হাড়-ভাঙা খাটাচ্ছে, আমাকেই ঠকাচ্ছে। আপনারা একটু দেখুন।
বললাম, ভক্তি আর বিশ্বাস নিয়ে মাটি খেয়ে নিজের সমস্যার সমাধান করছেন না কেন? কেন আমাদের সাহায্য চাইছেন? তার মানে, আপনি নিজে-ই খেজুর তলার মাটির অলৌকিক গুণে বিশ্বাস করেন না!
না। কিছুক্ষণ আমতা-আমতা করলেন। জবাব দিতে পারলেন না।
গেলাম মন্দির কমিটির অফিসে। খেজুরতলা থেকে দশ গজের পথ। নতুন ঢেউখেলানো টিন দিয়ে সদ্য তৈরি একটা হল। কয়েকটা টেবল জোড়া দিয়ে বসানো হয়েছে হলের মাঝে। চার-পাশেই পাতা হয়েছে অনেকগুলো ফোলডিং চেয়ার।
মন্দির কমিটির অনেককেই পেয়ে গেলাম। সভাপতি কালীপদ বিশ্বাস পেশায় সাব-ইনস্পেকটর অফ স্কুল। যুগলচন্দ্র দাস সম্পাদক। এখানকার প্রভাবশালী সি পি এম রাজনীতিক। সুনীলকুমার বিশ্বাস কোষাধাক্ষ। পেশায় উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক। ৩৭ জনকে নিয়ে গড়ে উঠেছে মন্দির কমিটি। কমিটিতে সি পি এম, তৃণমূল, কংগ্রেস শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করছেন।
আমাদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব নিয়েছিলেন কালীপদ বিশ্বাস, যুগলচন্দ্র দাস, সুনীল বিশ্বাস ও কমিটির সদস্য কার্তিক দাস (স্থানীয় তৃণমূল নেতা)। টি ভি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে হবে বুঝে-সমঝে। যে কোনও হিজিবিজি লোককে তো আর মুখপাত্র হিসেবে হাজির হতে দেওয়া যায় না। মুখপাত্রদের হিসেব—দৈনিক গড়ে ৩০-৪০ হাজার লোক হচ্ছে। গত শনি-মঙ্গল হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ হাজার। প্রণামী পড়ছে দু-পাঁচ টাকা থেকে হাজার টাকাও। বললাম, তাহলে গড়ে দৈনিক অন্তত লাখ দুয়েক টাকা আয় হচ্ছে? অনিচ্ছায় সে কথা স্বীকার করলেন কোষাধ্যক্ষ। ব্রজেনবাবুর অভিযোগের উত্তরে জানালেন, প্রণামীর টাকা জমা রাখছি মন্দির, ভক্তদের জন্য রাত্রিনিবাস, রাস্তা তৈরির জন্য খরচ করব বলে।
কোনও ব্যাঙ্কে নিশ্চয়-ই জমা রাখছেন? জিজ্ঞেস করলাম।
উত্তর না দিয়ে কোনও একটা কাজের কথা হঠাৎ করে মনে পড়ে যাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে বেরিয়ে গেলেন।
কথায় কথায় খেজুরতলা মন্দির কমিটির মুখপাত্ররা স্বীকার করলেন, (১) কয়েক দিন আগে একটা বিবাদ হয়েছিল। কিছু লোভী মানুষ তাদেরও মন্দির কমিটিতে ঢোকার দাবি তুলে ঘোঁট পাকিয়ে ছিল। (২) ঘোঁটটা একটু বড় আকার ধারণ