পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৪
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)

টেলিপ্যাথির সাহায্যে নােটের নম্বর বলা

 শ্রীলঙ্কার যুক্তিবাদী ডঃ আব্রাহাম থােম্মা কোভুর ১৯৬৩ সালে টেলিপ্যাথি ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ২৫ হাজার সিলােনিজ টাকা পর্যন্ত বাজি রাখেন। কোভুর ঘােষণায় বলেছিলেন—টেলিপ্যাথি ক্ষমতার অধিকারী দু-জনের মধ্যে একজনকে একটি কাগজের টাকা দেখান হবে। সেই টাকার নম্বর অন্যজনকে বলে দিতে হবে।

 অবশ্য এই ধরনের পরীক্ষায় কেউ সাফল্য দেখালেই সেটাকে টেলিপ্যাথির সফল পরীক্ষা বলে মেনে নিতে আমি রাজি নই। কারণ ওর মধ্যেও থাকতে পারে কিছু কৌশল। আমি আমার ১১ বছরের ছেলে পিংকির সহায়তায় বহুবার এই ধরনের টেলিপ্যাথি সেমিনার ও অনুষ্ঠানে দেখিয়েছি। অনেকেই এটাকে খাঁটি টেলিপ্যাথি বলেই যে ধরে নিয়েছিলেন। বােঝাবার পর ভুল ভেঙেছে।

 আমার এক বন্ধুর বাড়িতে সপরিবারে বেড়াতে গিয়ে আড্ডায় বেশ জমে উঠেছিলাম। ‘ধান ভানতে শিবের গীত’-এর মতােই বন্ধু বলল, টেলিপ্যাথি ব্যাপারটিকে তুই কী বলবি—সত্যি, না কি বুজরুকি?

 বললাম, “বেশ তাে, তােদের একটা টেলিপ্যাথি করে দেখাচ্ছি। ব্যাখ্যা পরে দেবাে।

 “পিংকি (আমার একমাত্র ছেলে। বয়েস এগারাে আমার যুক্তিবাদী কাজকর্মের সঙ্গী) এই ঘরেই থাকুক। আমি যাচ্ছি তাের সঙ্গে পাশের ঘরে। তুই যে কোনও একটা কাগুজে টাকা আমাকে দেখাবি। নােটের নম্বরটা দেখে আমি টেলিপ্যাথির সাহায্যে পিংকির মস্তিষ্কে চিন্তাটা পাঠাব। পিংকি নােটের নম্বর বলে দেবে।”

 পাশের ঘরে বন্ধুর দেওয়া নােটের নম্বরটা দেখলাম ১০৯৬৩৬। বন্ধুকে বললাম, “এবার পিংকি ঠিক আমার চিন্তা ধরে নেবে। তারপর বল, এবার পুজোয় তুই কোথায় যাচ্ছিস?”

 বন্ধু বলল, “কিছুই ঠিক করিনি।”

 বললাম, “এবার আমার রাজস্থান, দিল্লি, আগ্রা সাইডটা দেখার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু বােধহয় যাওয়া হবে না। আগামী পুজোর আগে হবে বলে মনে হচ্ছে না। দুই প্রকাশকের দুটো বড়-সড় কাজ রয়েছে হাতে। অতএব পুজোটা খাতা-কলম নিয়েই কাটাতে হবে মনে হচ্ছে।”

 ও ঘর থেকে পিংকি জবাব দিল, “নােটের নম্বর ১০৯৬৩৬।”


 ১৯৮৬-র ১৬-১৭ই ফেব্রুয়ারি। স্থান: কলকাতার মৌলালী যুবকেন্দ্রে। মনােবিজ্ঞানী, মনােরােগ চিকিৎসক এবং সমাজবিজ্ঞানীদের নিয়ে “মানসিক ব্যাধি ও আমাদের কর্তব্য” শিরােনামে দু’দিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হলাে। আয়ােজক, ছিলেন “মানব মন রজত জয়ন্তী উৎসব কমিটি।” উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের