পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
Psycho-kanesis বা Pk (মানসিক শক্তি)
২৮১

করা হবে। এই অবস্থায় E.C.G গ্রহণের ব্যবস্থা রাখলে যােগীর কোনও কৌশল গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।

কোনও অতীন্দ্রিয় পরীক্ষা গ্রহণের সময় প্রতিযােগিকে সম্ভাব্য
সমস্ত কৌশল গ্রহণের সুযােগ থেকে দূরে রাখতে হবে।
যেখানে সুযােগ গ্রহণের অবকাশ রয়েছে সেখানে
পরীক্ষাটিকে কখনই যুক্তিগ্রাহ্য ও
বিজ্ঞানগ্রাহ্য বলা যাবে না।

 আমার কথায় আপনারা অনেকেই আপত্তি তুলতে পারেন। জানি, আপনাদের অনেকেই বলবেন—আপনি নিজের চোখে কোনও সন্ন্যাসী বা যােগীকে মাটির নীচে মাথাটা ঢুকিয়ে দিয়ে শীর্ষাসনে থাকতে দেখেছেন। অনেক এও দেখেছেন, বড় গর্ত খুঁড়ে গর্তের ভেতর পদ্মাসনে বসে থাকেন যােগী বা সন্ন্যাসী। তারপর তার সারা শরীরটাকেই মাটি চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। এই অবস্থায় তাঁরা বেশ কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে দেন। হ্যাঁ, আপনারা যা দেখেছেন আমিও তা দেখেছি। ঘটনাটা দেখলে যেমন যােগের অলৌকিক ফল বলে মনে হয়, বাস্তব ক্ষেত্রে কিন্তু আদৌ তা নয়। ভূ-সমাধির আগে সন্ন্যাসী বা যােগী মহারাজ তাঁর মাথাটা একটা পাতলা কাপড়ে ঢেকে নেন, যাতে চোখে মুখে বা নাকে মাটি ঢুকে না যায়। ভূ-সমাধির গর্তটা বেশ কিছুটা বড় করা হয় এবং ওপর থেকে আলগা মাটি ঢেলে শরীর বা মাথাটার ভূ-সমাধি ঘটানাে হয়। আলগা মাটির ফাঁক দিয়ে অনায়াসেই বায়ু চলাচল করে এবং নাক পাতলা কাপড়ের ছাঁকনি ভেদ করে এই বায়ুর সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ চালিয়ে যায়। দীর্ঘ অধ্যবসায় ও অনুশীলনের ফলে শরীরে অক্সিজেনের প্রয়ােজন কমিয়ে দেওয়া সম্ভব। এই অনুশীলনকেই সাধু-সন্ন্যাসী যােগীরা যােগের অলৌকিক শক্তি বলে প্রচার লেগে পড়েন।

 কলকাতার রাজভবনের কাছে একটি যােগীকে দেখেছিলাম যে ভূ-সমাধির গর্তে বায়ু আসার জন্য একটি নলের ব্যবস্থা রেখেছিল। নলটা মাটির তলা দিয়ে গিয়েছিল দূরে বসে থাকা তারই কয়েকজন সঙ্গীর ঝােলায়। ভূ-সমাধির মাটি ভালাে করে পিটিয়ে বন্ধ করা ছিল বলেই আমি বায়ু-নলের উপস্থিতি অনুমান করতে পারি। যােগীবাবার সহকারী যেখানে বসেছিল সেখানটা পরীক্ষা করতেই কৌশল বেরিয়ে পড়ে। উপস্থিত দর্শকদের প্রচণ্ড গালাগাল শুনতে শুনতে দু’জনেই দ্রুত তল্পিতল্পা গুটিয়ে পালিয়ে যায়।

 জাদু জগতের বিস্ময় জাদুকর হ্যারি হুডিনিকে (harry Houndini) একবার কফিনে পুরে ৬ ফুট মাটির নীচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। ৬০ মিনিট পরে কফিনটি ওপরে তোলা হয় এবং দেখা যায় হুডিনি জীবিত।