জাদুকর যে মেয়েটিকে শূন্যে ভাসিয়ে রাখতে চান, তার পােশাকের তলায় থাকে একটা ৫ থেকে ৭ ইঞ্চি চওড়া ফুট দেড়েকের মতাে লম্বা শক্ত ধাতুর পাত। পাতটি প্রয়ােজন অনুসারে | o] লম্বা বা 0 3 এই ধরনের একটু বাঁকানাে হতে পারে। চামড়ার বা ক্যানভাসের তিন-চারটে বেল্ট দিয়ে ধাতুর পাতটি শরীরের সঙ্গে বাঁধা থাকে। পাতুটিতে প্রয়ােজনমতাে এক বা একাধিক ফুটো থাকে। যে ডাণ্ডার ওপর নির্ভর করে মেয়েটি শূন্যে ঝুলে থাকে, সেই ডাণ্ডার মাথাটা হয় একটু বিশেষ মাপের। দেখতে হবে ডাণ্ডার মাথাটা যেন মেয়েটির পােশক সমেত ওই ধাতুর পাতের ফুটোয় শক্ত ও আঁটোসাঁটোভাবে ঢােকে। মেয়েটির যা করণীয়, তা হলাে সম্মােহিত হওয়ার অভিনয় ও সরু পাতের ওপর ব্যালান্স রেখে শােয়া।
ডাণ্ডার ওপর হাত রেখে সাধুরা যেসব পদ্ধতিতে নিজেদের দেহকে শূন্যে ভাসিয়ে রাখেন, তার কয়েকটা ছবি এখানে দিলাম। শূন্যে ভেসে থাকা বিষয়ে আগেই বিস্তৃত আলােচনা করে নেওয়ায় ছবিগুলাে দেখলে আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন সাধুদের ভেসে থাকার কৌশলগুলাে।
আলেকজান্ডার হাইমবুর্গার (Alexander Heimburghar) নামে এক বিখ্যাত জাদুকর আমেরিকায় ১৮৪৫-৪৬ সাল নাগাদ একটা অদ্ভুত খেলা দেখিয়ে আলােড়নের ঝড় তুলেছিলেন। খেলাটা ছিল জাদুকরের এক সঙ্গী, একটা খাড়া ডাণ্ডার মাথায় শুধুমাত্র একটা হাতের কনুই ঠেকিয়ে শূন্যে ভেসে থাকত।
আলেকজান্ডারের লেখা থেকেই জানা যায়, তিনি এই খেলা দেখানাে শুরু করেন ভারত থেকে প্রকাশিত একটি বার্ষিকী পত্রিকায় এক ফকিরের অলৌকিক খেলার বর্ণনা পড়বার পর। ফকিরটি একটি বাঁশের লাঠি মাটিতে খাড়া রেখে লাঠির ওপর হাত ঠেকিয়ে তার এক সঙ্গীকে হাওয়ায় ভাসিয়ে রাখত।
অসাধারণ জাদুকর হ্যারি হুডিনি এক জাদু আলােচনায় বলেন, তিনি এই লাঠিতে ভর দিয়ে শুন্যে ভেসে থাকার খেলাটির কথা প্রথম জানতে পারেন টমাস ফ্রস্ট (Thomas Frost) নামের এক ইংরেজ লেখকের লেখা বই পড়ে। লেখক ১৮৩২ সালে মাদ্রাজের এক ব্রাহ্মণকে শূন্যে বসে থাকতে দেখেন। ঘটনাটা ঘটেছিল এইভাবে, একটা তক্তাজাতীয় কাঠের টুকরােতে চারটে পায়া লাগানাে ছিল। তক্তায় ছিল একটা ফুটো। ফুটোটা ছিল এই মাপের, যাতে একটা লাঠি ঢােকালে লাঠিটা শক্ত হয়ে তক্তার সঙ্গে আটকে খাড়া দাঁড়িয়ে থাকে। খাড়া দাঁড়িয়ে থাকা লাঠির সঙ্গে লাগানাে থাকত আর একটা ছােট ডাণ্ডা। এটা থাকত মাটির সঙ্গে সমান্তরালভাবে। ছােট ডাণ্ডাটায় বাহু রেখে শুন্যে ভেসে থাকতেন ব্রাহ্মণ।
১৮৪৮ সাল নাগাদ আধুনিক জাদুর জনক রবেয়ার উদাও তার
দু’বছরের ছেলে ইউজেনকে এই পদ্ধতিতে শূন্যে ভাসিয়ে