পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অপত্যস্নেহের একশেষ।
১১৫

স্থানে উপস্থিত হইয়া,নৌকাবন্ধনের আদেশ দিলেন। ভৃত্যদিগকে তীরে অবতীর্ণ করিয়া, শিশুসংগ্রহের নিমিত্ত প্রেরণ করিলেন, এবং স্বয়ং সেই নৌকায় অবস্থিতি করিতে লাগিলেন। তদীয় ভৃত্যেরা ইতস্ততঃ অনেক অন্বেষণ করিয়া, পরিশেষে এক কুটীর দেখিতে পাইল। তাহারা অভীষ্টসিদ্ধির সম্ভাবনা দর্শনে, সাতিশয় হৃষ্ট হইয়া কুটীরদ্বারে উপস্থিত হইল। দেখিল, এক নারী আহারসামগ্রী প্রস্তুত করিতেছে, আর তাহার দুটি শিশুসন্তান সমীপদেশে ক্রীড়া করিতেছে।

 ঐ নারী দর্শনমাত্র, তাহাদের অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া, স্বীয় সন্তানদ্বিতয় লইয়া পলায়ন করিতে আরম্ভ করিল। অস্ত্রধারী মিশনরিভৃত্যেরা তাহার পশ্চাৎ ধাবমান হইল। একে স্ত্রীজাতি পুরুষ অপেক্ষা দুর্ব্বল, তাহাতে আবার ক্রোড়ে দুই সন্তান, সুতরাং পলায়ন দ্বারা সেই অনুসরণকারী দস্যুদিগের হস্ত হইতে পরিত্রাণ পাওয়া, কোনও ক্রমে সম্ভাবিত নহে। সে, কিয়ৎ ক্ষণের মধ্যেই ধৃত ও সন্তান সমভিব্যাহারে, বলপূর্ব্বক নদীতীরে নীত হইল। মিশনরি মহোদয়, নৌকায় অবস্থিত হইয়া, উৎসুকচিত্তে স্বীয় ভৃত্যদিগের প্রত্যাগমন-প্রতীক্ষা করিতেছিলেন, এক্ষণে তাহাদিগকে শিশুদ্বয় সমভিব্যাহারে প্রত্যাগত দেখিয়া, প্রীতমনে ও প্রফুল্লবদনে প্রশংসাবাদ প্রদান করিতে লাগিলেন।

 ঐ নারীর স্বামী ও দুই তিনটি অধিকবয়স্ক সন্তান, মৎস্য ধরিবার নিমিত্ত, স্থানান্তরে গিয়াছিল, তাহাদিগকে ছাড়িয়া