পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দয়ালুতা ও ন্যায়পরতা
১২৯

মতে অন্যথা করিবেনা। এই বলিয়া সম্রাট্ তাহার পিতার নাম জানিয়া লইলেন; এবং তাহাকে আশ্বাসিত হইতে বলিয়া প্রস্থান করিলেন।

 বালিকা তাঁহার এইরূপ নিরুপাধি দয়া ও অসামান্য সৌজন্য দর্শনে, মোহিত ও চমৎকৃত হইল, এবং আহ্লাদে পুলকিত হইয়া, বাষ্পবারিপরিপূরিতনয়নে কিয়ৎক্ষণ তাঁহার দিকে নিরীক্ষণ করিয়া রহিল, পরে তিনি দৃষ্টিপথের বহির্ভূত হইলে, গৃহপ্রতিগমনপূর্ব্বক, সবিশেষ সমস্ত আপন জননীর গোচর করিল।

 সম্রাট্ রাজবাটীতে প্রবিষ্ট হইয়াই উপস্থিত বিষয়ের তত্ত্বানুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইলেন, এবং অবিলম্বে জানিতে পারিলেন, বালিকা যাহা বলিয়াছিল, তাহার সমস্তই সম্পূর্ণ সত্য। বালিকা ও তাহার জননী যে অকারণে এত দিন কষ্টভোগ করিতেছে, এবং তাহার পিতাও যে, শেষদশায় ক্লেশভোগ করিয়া প্রাণত্যাগ করিয়াছে, সে জন্য তিনি যৎপরোনাস্তি ক্ষোভ ও পরিতাপ প্রাপ্ত হইলেন, এবং কালবিলম্ব না করিয়া তাহাদের উভয়কে রাজবাটীতে আনাইলেন। সেই বালিকার পিতা যত বেতন পাইতেন, তৎসমান পেন্সন্ প্রদানের আদেশ দিয়া, তিনি তাহাদিগকে বিনীতভাবে বলিলেন, যথাকালে পেন্সন্ না পাওয়াতে তোমাদিগকে অনেক ক্লেশভোগ করিতে হইয়াছে, সে জন্য আমি তোমাদের নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করিতেছি। তোমরা বিবেচনা করিয়া দেখ, আমি ইচ্ছাপূর্ব্বক তোমাদিগকে