পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
আখ্যানমঞ্জরী

যায়, এই আশঙ্কায় সতর্ক হইয়া, অহোরাত্র ক্ষেত্রের রক্ষণাবেক্ষণ করিতে লাগিল। বহুদিন অতীত হইল, তথাপি চারা নির্গত হইল না। তখন অনেকের মনে এই সন্দেহ উপস্থিত হইল, হয় ত সে ব্যক্তি প্রতারণা করিয়া গিয়াছে। কিন্তু যখন শস্যের নির্দ্দিষ্ট সময় অতীত হইয়া গেল, অথচ অঙ্কুর পর্য্যন্ত অবলোকিত হইল না, তখন তাহারা প্রতারিত হইয়াছি বলিয়া নিশ্চিত বুঝিতে পারল, এবং প্রতিজ্ঞা করিল, আর কখনও আমরা য়ুরোপীয়লোকের সহিত ব্যবহার বা তাহাদের কথায় বিশ্বাস করিয়া কোনও কার্য্য করিব না।

 যথেষ্ট লাভ হওয়াতে ফরাসি বণিকের বিলক্ষণ লোভ জন্মিয়াছিল। কিন্তু এই চাতুরীর পর আর মিশৌরী যাইতে আর সাহস হইল না। তিনি অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া, অবশেষে অশেষবিধ দ্রব্যসামগ্রী সমভিব্যাহারে দিয়া, আপন ব্যবসায়ের অংশীকে তথায় পাঠাইয়া দিলেন, বলিয়া দিলেন, আমি তাহাদের সঙ্গে এই চাতুরী করিয়া আসিয়াছি, সাবধান, যেন তাহারা তোমায় আমার অংশী বা আত্মীয় বলিয়া জানিতে না পারে।

 অংশীর নিকট হইতে এই উপদেশ লইয়া, সে ব্যক্তি মিশৌরীতে উপস্থিত হইলেন। তত্রত্য লোকেরা আনীত দ্রব্যসমুদয়ের দর্শনার্থ জাহাজে যাতায়াত করিতে লাগিল। ফরাসি বণিক্‌, পরিচয়প্রদান-বিষয়ে সবিশেষ সাবধান হইয়াছিলেন। কিন্তু তত্রত্য লোকেরা কোনও প্রকারে বুঝিতে পারিল, যে ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে চাতুরী করিয়া গিয়াছে, এ তাহার প্রেরিত ও