পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সৌভ্রাত্র।
৫৯

 জ্যেষ্ঠের এই সকল কথা শুনিয়া কনিষ্ঠ বলিলেন, আপনি অবধারিত জানিবেন, আমি কোনও ক্রমে আপনাকে আমার সমক্ষে প্রাণত্যাগ করিতে দিব না। কনিষ্ঠ, এই বলিয়া, জানুপাতন পূর্ব্বক, দৃঢ়বন্ধনে তাঁহার চরণে ধরিয়া রোদন করিতে লাগিলেন। জ্যেষ্ঠ ও অন্যান্য সকলে বিস্তর চেষ্টা পাইলেন, কিন্তু, কোনও ক্রমে তাঁহার ভুজবন্ধনের অপনয়ন করিতে পারিলেন না। তখন জ্যেষ্ঠ বলিলেন, বৎস, তুমি এ অধ্যবসায় পরিত্যাগ কর। আমি যেরূপ করিতেছিলাম, আমি অবিদ্যমানে তুমি সেইরূপ আমার পুত্রকন্যাদিগেব লালনপালন, আমার পত্নীর রক্ষণাবেক্ষণ ও অনাথা ভগিনীদিগের ভরণপোষণ করিতে পারিবে। অতএব, আমার কথা শুন, ক্ষান্ত হও, আমায় প্রাণত্যাগ করিতে দাও।

 এইরূপে জ্যেষ্ঠ, কনিষ্ঠকে অনেক প্রকারে বুঝাইলেন, কিন্তু কোনও ক্রমে তাঁহাকে বিরত করিতে পারিলেন না। অবশেষে, তাঁহাকে কনিষ্ঠের প্রস্তাবে সম্মত হইতে হইল। অনন্তর অপর তিন জন ও সেই যুবক অর্ণবপ্রবাহ প্রক্ষিপ্ত হইলেন। তিন জন তৎক্ষণাৎ অদর্শন প্রাপ্ত হইলেন, কিন্তু সেই যুবক সন্তরণ-বিষয়ে বিলক্ষণ নিপুণ ছিলেন, এজন্য সহসা জলমগ্ন হইলেন না। তিনি কিয়ৎক্ষণ সন্তরণ পূর্ব্বক, প্রাণভয়ে অভিভূত ও কাতর হইয়া, দক্ষিণ হস্ত দ্বাবা পিনেসের ক্ষেপণী ধারণ করিলেন। একজন পোতবাহ অস্ত্র দ্বারা তৎক্ষণাৎ তাঁহার হস্তচ্ছেদন করিলে, তিনি পুনরায় সন্তরণ করিতে লাগিলেন, এবং কিয়ৎ