পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যতো ধর্ম্মস্ততো জয়ঃ।
৭৯

যুবক সমৃদ্ধবংশসম্ভূত। তিনি যেরূপ অসাধারণগুণসম্পন্ন ছিলেন, সচরাচর সেরূপ দেখিতে পাওয়া যায় না। তাঁহার প্রতিবেশিনী অলিন্দানাম্নী এক কামিনী অলৌকিকরূপলাবণ্যপূর্ণা ও অসামান্যগুণসম্পন্না ছিলেন। ক্রমে ক্রমে, উভয়েরই অন্তঃকরণে প্রণয়সঞ্চার হইলে, সাবিনস্‌ যথানিয়মে অলিন্দার পাণিগ্রহণ করিলেন। এইরূপে দম্পতিভাবে সম্বদ্ধ হইয়া, উভয়ে মনের সুখে কালযাপন করিতে লাগিলেন।

 কিন্তু অবিচ্ছিন্ন সুখসম্ভোগে কালহরণ করা অল্প লোকের ভাগ্যে ঘটিয়া থাকে। অন্যশুভদ্বেষিণী ঈর্ষ্যা, কিয়ৎ কালের নিমিত্ত তাঁহাদের সুখে কালহরণ করিবার দুরতিক্রম প্রত্যূহ হইয়া উঠিল। ঐ স্থানে এরিয়ানানাম্নী অপর এক কামিনী ছিলেন। তাঁহার সহিত সাবিনসের সন্নিহিতকুটুম্বসম্বন্ধ ছিল। এরিয়ানা বিলক্ষণ সুরূপা, সাতিশয় সমৃদ্ধিশালিনী, স্বভাবতঃ প্রফুল্লহৃদয়া, সদ্বিবেচনাপূর্ণ ও দয়াদাক্ষিণ্যাদিসদ্‌গুণসম্পন্না ছিলেন। তাহার একান্ত বাসনা ছিল, সাবিনসের সহধর্ম্মিণী হইয়া সুখে কালযাপন করিবেন। কিন্তু সাবিনস্‌, অলিন্দার পাণিগ্রহণ করাতে, তাঁহার সে বাসনা বিফল হইয়া গেল। তদ্দ্বারা তাঁহার হৃদয় ঈর্ষ্যাকলুষিত ও বিদ্বেষদূষিত হইল। ঈর্ষ্যার কি অনির্বচনীয় মহিমা। তাঁহার স্বভাবসিদ্ধ প্রফুল্লহৃদয়তা ও দয়াদাক্ষিণ্যাদি গুণ অন্তর্হিত হইল। তিনি ঈর্ষ্যার বশীভূত ও বিদ্বেষবুদ্ধির অধীন হইয়া, অনবরত এই চিন্তা করিতে লাগিলেন, কিরূপে তাঁহাদের অনিষ্টসাধন করিতে পারিবেন, এবং