পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
আখ্যানমঞ্জরী

পাঠাইয়া দেন। তিনি স্থির করিয়াছিলেন, ইহারা যেরূপ দুরবস্থায় পড়িয়াছে, এই প্রস্তাব শুনিলে অবশ্য তদনুযায়ী কার্য্য করিতে সম্মত হইবে। বিশেষতঃ, আমা হইতে তাহাদের কারাবাস ঘটিয়াছে, সুতরাং আমার মৃত্যু শুনিলে, নিঃসন্দেহ তাহাদের আহ্লাদ জন্মিবে। তিনি, পার্শ্ববর্ত্তী গৃহে প্রচ্ছন্নভাবে অবস্থিতি কবিতেছিলেন, সুতরাং স্বকর্ণে ও তাঁহার প্রেরিত প্রতিনিবৃত্ত লোকের মুখে সবিশেষ সমস্ত শ্রবণ করিয়া, তাঁহাদের প্রতি তাঁহার অতিশয ভক্তি জন্মিল, এবং যে বিদ্বেষবুদ্ধির অধীন হইয়া এতদিন তাঁহাদিগকে কষ্ট দিয়াছিলেন, তাহা এককালে অন্তর্হিত হইল। এরূপ সুশীল ও ধর্মপরায়ণ ব্যক্তিদিগকে অকারণে অবমানিত করিযাছি, ও যারপরনাই কষ্ট দিয়াছি, ইহা ভাবিয়া তিনি যৎপরোনাস্তি ক্ষুব্ধ ও লজ্জিত হইলেন।

 তখন এরিয়ানার হৃদযে স্বভাবসিদ্ধ দয়াদাক্ষিণ্যপ্রভৃতি সদগুণসমুদয় পুনরায় আবির্ভূত হইল। তিনি, অশ্রুপূর্ণলোচনে সেই গৃহে প্রবেশ করিয়া, আকুলবচনে পূর্ব্বকৃত নৃশংস আচরণের নিমিত্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করিলেন, এবং উভয়কেই স্নেহভরে আলিঙ্গন করিয়া, প্রবলবেগে বাষ্পবারিবিসর্জ্জন করিতে লাগিলেন। সাবিনস্ ও অলিন্দা সেই দিবসেই কারামুক্ত হইলেন। এরিয়ানা, বিনিয়োগপত্র দ্বারা তাঁহাদিগকে স্বীয় সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী নির্দ্ধারিত করিয়া রাখিলেন, এবং যাহাতে তাঁহারা আপাততঃ সুখে ও সচ্ছন্দে কালযাপন