করিতে, সে প্রাণত্যাগ করিল। তাহার মুখের ভাব দর্শনে, সন্নিহিত ব্যক্তি মাত্রেরই এরূপ বোধ ও বিশ্বাস জন্মিয়াছিল।
ইয়ুরোপের অন্তঃপাতী সুইট্জর্লণ্ড দেশ পর্ব্বতে পরিপূর্ণ। ঐ সকল পর্ব্বতের শিখরভূমি নিরন্তর নীহারে থাকে। এজন্য ঐ দেশে শীতের অত্যন্ত প্রাদুর্ভাব। জ্যেষ্ঠের বয়স নয় বৎসর, কনিষ্ঠের বয়স ছয় বৎসর, এরূপ দুই সহোদর, নীহারের উপর দৌড়াদৌড়ি করিয়া, খেলা করিতে করিতে, এক সন্নিহিত জঙ্গলে প্রবেশ করিল, এবং ক্রমে ক্রমে, অনেক দূর যাইয়া পথ হারাইল।
সায়ংকাল উপস্থিত হইল। তদ্দর্শনে তাহারা অতিশয় শঙ্কিত ও গৃহপ্রতিগমনের নিমিত্ত নিতান্ত ব্যগ্র হইয়া পথ অনুসন্ধান করিতে লাগিল, কিন্তু কিছুই নির্ণয় করিতে না পারিয়া, উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতে আরম্ভ করিল।
জ্যেষ্ঠটির বয়স যেমন অল্প, তাহার বুদ্ধি ও বিবেচনা তাহা অপেক্ষা অনেক অধিক হইয়াছিল। সে বিবেচনা করিল, যত চেষ্টা করি না কেন, এই জঙ্গল হইতে বাহির হইতে পারিব না, সুতরাং সে চেষ্টা করা বৃথা, এই স্থানেই রাত্রি কাটাইতে হইবে, কিন্তু নীহারের উপর শয়ন করিলে উভয়েই মরিয়া যাইব। অতএব যেখানে নীহার নাই, এমন স্থান অন্বেষণ করি।