পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধর্ম্মভীরুতা।
১৯

স্বামী তাঁহার অনুসন্ধান ও অবধারণ করিয়া তাহাকে দিবেন, আর আমি যে পরিশ্রম করিয়া, ইহা বহিষ্কৃত করিয়াছি, তজ্জন্য আমাকে কিঞ্চিৎ পুরস্কার দেওয়াইবেন।

 রাজার আদেশক্রমে, সেই স্থানেই বাক্স উদ্ঘাটিত হইল। তিনি, উহার মধ্যস্থিত রত্নসমূহের সৌন্দর্য্য দর্শন করিয়া, চমৎকৃত হইলেন, অনন্তর, সেই স্ত্রীলোককে সম্ভাষণ করিয়া কহিলেন, তুমি দুঃখিনী বটে, কিন্তু তোমার তুল্য নির্লোভ ও ধর্মপরায়ণ লোক কখনও দেখি নাই, তুমি যে ঈদৃশ মহামূল্য রত্ন সকল হস্তে পাইয়া ধর্ম্মভয়ে লোভ সংবরণ করিয়াছ, তজ্জন্য আমি তোমাকে সহস্র ধন্যবাদ দিতেছি। আজ অবধি তোমার দুরবস্থা দূর হইল, অতঃপর তোমায় এক দিনের জন্যও, কষ্ট পাইতে হইবে না। আমি তোমার ও তোমার সন্তানদিগের সমস্ত ভার গ্রহণ করিলাম।

 এই বলিয়া রাজা কোষাধ্যক্ষকে ডাকাইলেন, এবং অবিলম্বে সেই দুঃখিনী বিধবাকে বিংশতি সহস্র শিয়াস্তর[১] দিতে আদেশ করিলেন। অনন্তর, সেই রত্নসমূহের যথার্থ অধিকারীর সবিশেষ অনুসন্ধান করিবার নিমিত্ত, আজ্ঞা প্রদান করিয়া কহিলেন, যদি বিশিষ্টরূপ অনুসন্ধান করিয়াও প্রকৃত অধিকারীর উদ্দেশ না হয়, তাহা হইলে, এই সমস্ত রত্ন বিক্রীত হইবে, এবং বিক্রয়লব্ধ সমস্ত ধন এই বিধবা ও তাহার পুত্রেরা পাইবে।


  1. ইটালি প্রভৃতি দেশে প্রচলিত রৌপ্যমুদ্রা, মূল্য ১৮০