পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নিঃস্বার্থ পরোপকার।
৩৩

অতিশয় নিঃস্ব ও নিতান্ত নিরুপায় হইয়া পড়িলেন। যে গৃহে তাঁহার বিপণি ছিল, তাহার ভাটক দানে অসমর্থ হওয়াতে, তাঁহাকে ঐ গৃহ পরিত্যাগ করিতে হইল। এক্ষণে তাঁহার আর দাঁড়াইবার স্থান রহিল না। তাঁহার দুই পুত্র বিলক্ষণ সঙ্গতিপন্ন ছিলেন, এই দুঃসময়ে তাঁহারা তাঁহার কিছুমাত্র আনুকূল্য করিলেন না।

 মারগরেট ডিমলিন নামে তাঁহার এক পরিচারিকা ছিল। সে তেইশ বৎসর তাঁহার নিকটে কর্ম্ম করে। এক্ষণে স্বামিনীর দুরবস্থা দেখিয়া, তাহার অত্যন্ত দয়া উপস্থিত হইল। সে দয়া করিয়া আনুকূল্য না করিলে, নিঃসন্দেহ অনাহারে তাঁহার প্রাণবিয়োগ ঘটিত।

 ডিমলিন, প্রথমতঃ, এক প্রতিবেশীর নিকটে উপস্থিত হইল, এবং অনেক বিনয় ও কাতরোক্তি করিয়া এই প্রার্থনা করিল, আপনি অনুগ্রহ করিয়া, আপন বিপণির এক পার্শ্বে, আমার স্বামিনীকে স্থান দিন। তিনি সম্মত হইলে, হেনল্টকে সেই স্থানেই বাস করাইল। তথায়, তিনি পূর্ব্ববৎ নস্য বিক্রয় করিতে লাগিলেন। তদ্দ্বারা যাহা লাভ হইতে লাগিল, তাহাতে তাঁহার সমুদয় ব্যয় নির্ব্বাহ হওয়া কঠিন দেখিয়া, ডিমলিন তাঁহার আনুকূল্যের নিমিত্ত, সূচীকর্ম্ম প্রভৃতি দ্বারা, কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ উপার্জ্জন করিতে লাগিল।

 প্রতিবেশীরা ডিমলিনকে ধর্ম্মিষ্ঠা, দয়াশীলা ও সচ্চরিত্রা বলিয়া জানিত। সুতরাং অনেকেই তাহাকে নিযুক্ত করিবার নিমিত্ত ব্যগ্র হইত। কিন্তু, এমন দুঃসময়ে, আমি ইহাকে