বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মিথ্যার সহিত আপোষ ও শান্তি ক্রয়
১৮১

ওঠ কেন, ওকি  কোথা যাও সখি?
কনে।  (সরোদনে) “আইমার কাছে শুতে যাই!”

 শ্রেষ্ঠ ও চিন্তাশীল কবিদিগের ভাব একই রকমের হয়। বাংলার শ্রেষ্ঠ মহিলা কবিও গেয়েছেনঃ

“স্বজনের সাধ পুরাইতে শিশুপত্নী উজলিল ঘর”

* * * *
“অলঙ্কারে সহধর্ম্মিণীরে (কি বিদ্রূপ জানে অভিধান)

পুনশ্চ “জ্ঞানের আলোকে নাথ তুমি হ’লে অগ্রসর
অজ্ঞানের অন্ধকারে আমি ত বেঁধেছি ঘর॥ ”

 এই যে একই সমাজের স্ত্রী ও পুরুষদের মধ্যে একটা বিপুল ব্যবধান-ইহাই আমাদিগকে পঙ্গু করিয়া রাখিয়াছে। মায়ের স্তন্যদুগ্ধ পানের সঙ্গে সঙ্গে সন্তান মায়ের দোষ গুণ সকলের অলক্ষ্যে অর্জ্জন করে। শৈশবাবস্থার শিক্ষা দীক্ষা হয় মায়ের কাছে—মায়ের দ্বারা। ইংরাজ জাতি যে আজ এত বড় হইয়াছে তাহার একটি প্রধান কারণ এই যে, তাহার মায়ের নিকট হইতে ও মাতৃক্রোড়ে থাকিয়া কুসংস্কার শিক্ষা করিবার সুযোগ পায় না; আমাদের দেশে মায়ের চেয়ে বেশী সর্ব্বনাশ করে মায়ের মা বা দিদিমা ও আইমা। মা যদিও সংস্কার বিষয়ে একটু অগ্রণী হয়েন কিন্তু দিদিমা, ঠাকুরমার হাত এড়াবার যো নাই। এইরূপে আমরা এক পুরুষ পিছাইয়া গিয়াছি। বাল্য সংস্কার দূর করা খুব শক্ত। বইতে পা লাগিলে এখনো আমার দেহের শিরা উপশিরা আপনা আপনিই সঙ্কুচিত হয়—কিছুতেই এই কুসংস্কার ছাড়িতে পারি নাই। এখনও অনেক মেডিকেল কলেজের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ছাত্র গঙ্গাস্নান করিয়া অক্ষয় স্বর্গবাসের কল্পনা করেন। বিজ্ঞানের সব ছাত্রেরাই জানেন অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন হইতেই জল উৎপন্ন হয়। এই জল যদি ঘরে