বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৷৴৹

কেমিক্যাল ওয়ার্কসের জন্ম হয় এবং অল্পদিন পূর্ব্ব পর্য্যন্ত এই বাটীতেই ইহার প্রধান আফিস ছিল। বেঙ্গল কেমিক্যালের জন্য অনেক জিনিষের পরীক্ষা এই সময় প্রেসিডেন্সি কলেজের লেবরেটারীতে (যন্ত্রাগারে) হইত।

 ১৮৯৫ সাল প্রফুল্লচন্দ্রের জীবনের প্রধান স্মরণীয় বৎসর। এই বৎসর তাঁহার গবেষণার ফল স্বরূপ Mercurous Nitrite আবিষ্কৃত হয়। ইহাই তাঁহার সর্ব্বপ্রধান ও সর্ব্বপ্রথম আবিষ্কার। এই বৎসরই গন্ধকদ্রাবক প্রস্তুত করিবার যন্ত্রপাতি (Sulphuric Acid Plant) সংস্থাপিত হইয়া প্রকৃত প্রস্তাবে বেঙ্গল কেমিক্যাল ওয়ার্কসের কার্য্যারম্ভ হয়। আবার এই বৎসরই তাঁহার স্নেহময় পিতার মৃত্যু হইল। এইরূপ পরস্পর-বিরোধী হাসিকান্না, সুখদুঃখ, হর্ষ ও বিষাদের সঙ্ঘাতে তাঁহার প্রকৃতি এক অনির্ব্বচনীয় ভাবে বিভোর হইয়া পড়ে।

 ১৯০২ খৃঃ অব্দে তাঁহার হিন্দু রসায়নীবিদ্যার ইতিহাসের প্রথম ভাগ প্রকাশিত হয়। প্রাচীন ভারতে রসায়নীবিদ্যার কিরূপ উন্নতি হইয়াছিল, তাহা প্রমাণ করিবার জন্যই তিনি বহু পরিশ্রমে এই ইতিহাস প্রণয়ন করেন। ১৯০৫ খৃঃ অব্দে ইহার দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হইল। ১৯০৭ সালে উক্ত গ্রন্থের দ্বিতীয় ভাগ প্রচারিত হইয়াছে।

 প্রেসিডেন্সি কলেজের রাসায়নিক যন্ত্রাগারের উন্নতিসাধন করিবার ও রাসায়নিকগণের সংস্পর্শে আসিবার অভিপ্রায়ে বাঙ্গালা সরকার প্রফুল্লচন্দ্রকে ১৯০৭ খৃঃ অব্দে য়ুরোপের প্রধান প্রধান যন্ত্রাগার পরিদর্শন করিবার জন্য প্রেরণ করেন। ইংলণ্ড, ফ্রান্স ও জার্ম্মণীর প্রধান প্রধান যন্ত্রাগার দেখিয়া তিনি যে অভিজ্ঞতা লাভ করেন, তাহার ফলে ১৯১২ সাল হইতে প্রেসিডেন্সি কলেজের রাসায়নিক যন্ত্রাগারের বহু উন্নতি সাধিত হইয়াছে।