পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজকের আমেরিকা
৯৩

বিরুদ্ধে কিছু বলেছ অমনি সে তোমাকে মারতে আসবে। জাপানীরাও তাই। একজন জাপানীর সামনে তার ধর্মকে বেশ করে গাল দাও, তার মাতার চরিত্রে কলংক আছে বল, সে তোমাকে এড়িয়ে যাবে, কিন্তু যেই তার জাতের বিরুদ্ধে, তার দেশের বিরুদ্ধে কিছু বলেছ আমনি সে তোমার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়বে। হয় সে মরবে নয় তোমাকে মারবে। আমরা তার বিপরীত। তারই ফলে আমরা পরাধীন।

 আমাদের দেশের লোক আমাদের কি করে সর্বনাশ করে তারই কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেওয়া ভাল মনে করি। আফ্রিকা হতে লণ্ডন আসার পর আমার মন এতই দমে যায় যে বর্ণ-বিদ্বেষের অত্যাচারকে আমি যেমন ঘৃণা করতাম তেমনি অবহেলাও করতাম। আমার মনে সদাসর্বদা হিন্দুর জাতিভেদের কথাই মনে আসত বেশি করে এবং সেই জাতিভেদের অত্যাচার হতে ভারতবাসীকে কি করে মুক্ত করা যায় তারই কথা চিন্তা করতাম। নানা চিন্তায় অনেক সময় আমার দরকারী কথাও মনে থাকত না। যা হউক তখনকার দিনের ‘দেশ’ কাগজের লেখক শ্রীযুক্ত উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় আমাকে মাঝে মাঝে পত্র লিখে প্রকৃতিস্থ রাখতেন। তিনি আমাকে পত্রযোগে জানিয়েছিলেন নিউইয়র্কে অনেক বাংগালী বাস করে এবং তাদের মাঝে অনেকেই নিরক্ষর। লণ্ডনে হিন্দুস্থান এসোসিয়েসনের সেক্রেটারী মিঃ সুরাত আলীও এই শ্রেণীর কয়েকটি লোকের ঠিকানা দেন। সেই ঠিকানা অনুযায়ী নিউইয়র্কে একখানা পত্রও লিখেছিলাম। তার পরই আবার সকল কথা ভুলে যাই।

 নিউইয়র্কে দু’সপ্তাহ থাকার পর কয়েকজন সিলেটি মুসলমানের সংগে সাক্ষাৎ হয়, তারা আমাকে একটি প্রশ্ন বেশ জোর দিয়েই জিজ্ঞাসা করে, সেই প্রশ্নটি হল আমি কোন জাহাজে এবং কবে এসেছি। যখন আমি